পরমাণু কর্মসূচি আবার চালুর হুমকি ইরানের

যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে আর কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে চুক্তি ভঙ্গ করে ‘কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই’ পরমাণু কর্মসূচি আবারও শুরুর হুমকি দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2017, 02:54 PM
Updated : 15 August 2017, 02:54 PM

নতুন করে পরমাণু কর্মসূচি শুরু হলে তা ২০১৫ সালের তুলনায় আরও আধুনিক হবে বলেও রুহানি জানিয়ে দিয়েছেন।

২০১৫ সালেই বিশ্বের শক্তিধর ছয় দেশের সঙ্গে একটি চুক্তির আওতায় ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি হ্রাস করেছিল। বিভিন্ন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে শিথিল করা হবে এই  শর্তেই  পরমাণু প্রকল্পের কাজ অন্তত ১০ বছরের জন্য হ্রাস করতে রাজি হয় ইরান।

এখন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে ইরান ওই চুক্তি পরিহার করবে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে।

চুক্তিটিকে ‘শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক উপায়ে জয়লাভের’ উদাহরণ বলে বর্ণনা করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি।

পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী ইরান তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে চায় জানিয়ে মঙ্গলবার পার্লামেন্টে এক ভাষণে রুহানি বলেন, “কিন্তু এটিই (আমাদের সামনে) একমাত্র পথ নয়।”

“যারা হুমকির ভাষায় এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথে ফিরে যেতে চায় তারা আসলে তাদের অতীত বিভ্রমের মধ্যেই বাস করছে। যদি তারা আবারও অতীত অভিজ্ঞতায় ফিরে যেতে চায় তবে নিশ্চিতভাবেই ‍খুব কম সময়ে আরও শক্তিশালী হয়ে আমরা আমাদের আগের অবস্থায় ফিরে যাব। এজন্য আমরা সপ্তাহ বা মাস সময় নেব না, বরং দিন বা ঘণ্টার হিসেবে আমরা তা করব।”

এ বছর জানুয়ারিতে একটি মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরানের এই পরীক্ষা জাতিসংঘের চুক্তির লঙ্ঘন।

অন্যদিকে, ইরানের দাবি  নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র বরং পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।

পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম হতে পারবে এমন কোনও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের এমনকি নকশার উন্নয়ন নিয়েও কাজ করতে পারবে না ইরান। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের প্রযুক্তি নিয়েও কাজ করা যাবে না।

ইরানের দাবি, জানুয়ারির শেষ দিকে পরীক্ষা চালানো ক্ষেপণাস্ত্রটি পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম নয়। তাদের পরমাণু প্রকল্প পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ কারণে বলেও জোর দাবি তাদের।

ওদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্রমাগত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

ইরানের সর্বশেষ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর ট্রাম্প প্রশাসন সতর্ক করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ‘ইরানের শত্রুতাপূর্ণ এবং আগ্রাসী আচরণে আর চোখ বন্ধ করে থাকবে না’। যদিও তারা স্বীকার করেছে, জানুয়ারির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা পরমাণু চুক্তির ‘সরাসরি লঙ্ঘন নয়’।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্র ‘একজন ভাল অংশীদার না বা বিশ্বাসযোগ্য মধ্যস্থতাকারী না’, এরই মধ্যে বিশ্ব তা স্পষ্ট বুঝে গেছে বলেও মন্তব্য করেছেন রুহানি।

তিনি বলেন,“এরই মধ্যে ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছেন এবং কিউবার সঙ্গে চুক্তি থেকে পিছিয়ে গেছেন।”