বৃহস্পতিবার বিলটি ৯৮-২ ভোটে পাস হয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
নিয়মানুযায়ী এখন এটি প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের জন্য তার দপ্তরে যাবে। তিনি চাইলে বিলে ভেটো দিতে পারেন।
তবে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট উভয় দলের সিনেটরদের প্রায় সর্বসম্মতভাবে নেওয়া এ সিদ্ধান্তে ভেটো দেওয়া ট্রাম্পের জন্য কঠিন হবে।
বিলে ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার ওপরও নতুন নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার এই বিল এর আগে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদেও বিরাট ব্যবধানে অনুমোদিত হয়েছিল
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পকে জেতাতে মস্কো হস্তক্ষেপ করেছিল। নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট এবং বিচার বিভাগের তদন্তও চলছে।
যদিও শুরু থেকেই ট্রাম্প এবং রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কথা বলে আসছেন, কিন্তু নতুন এই বিল সেই সম্ভাবনায় বাধ সাধবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিলের একটি ধারায় বলা হয়েছে, ট্রাম্প যদি রাশিয়ার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা সহজ করতে চান, তাহলে কংগ্রেস তাতে বাধা দিতে পারবে।
হোয়াইট হাউজ এর আগে জানিয়েছিল, তারা রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার পক্ষে থাকলেও সিনেটে পাস হওয়া বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে।
রয়টার্স বলছে, দুই কক্ষে বিলের পক্ষে যে বিপুল সমর্থন দেখা গেছে, তাতে ট্রাম্প যদি বিলে ভেটোও দেন তাহলে প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেটে বিলের পক্ষে সমর্থনকারীরা প্রেসিডেন্টের ইচ্ছাকে পাশ কাটিয়ে নতুন করে বিলটিকে আইনে পরিণত করার সামর্থ্য রাখেন।
বিলের পক্ষে রিপাবলিকানদের শক্ত অবস্থান ট্রাম্পকে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে ভাবিয়ে তুলবে বলেও বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন।
এর আগে বুধবার রাশিয়া সতর্ক করে বলেছে,নতুন নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবের পাল্টা হিসেবে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে মস্কো।
পুতিন বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরই মস্কো এর পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে ভাববে।
একইদিন ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞায় উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, এর ফলে ইউরোপের জ্বালানি নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে; এবং তেমনটা হলে তারাও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
“রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের দিক থেকে এটি একটি দুঃসংবাদ। আমরা চরম অবন্ধুসুলভ একটি পদক্ষেপের ব্যাপারেই কথা বলছি,। বলেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞার বিল আইনে পরিণত হলে এর জবাব মস্কো কিভাবে দেবে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনই তা ঠিক করবেন।
রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের ব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন, এটি দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে অতলে নিমজ্জিত করছে, এতে ভবিষ্যতে সম্পর্ক উন্নয়নের কোনওরকম আশাও আর থাকছে না।
এর আগে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে যা্ওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হ্যাকিংয়ের অভিযোগে গতবছরের ডিসেম্বরে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ৩৫ রাশিয়ান কূটনীতিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কার করেন; দুটি রাশিয়ান কম্পাউন্ড জব্দ করা হয়।