শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হোসেইন দেহঘান এক অনুষ্ঠানে ক্ষেপণাস্ত্র বানানোর জন্য নতুন এ উৎপাদন লাইনের ঘোষণা দেন বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সাযযাদ থ্রি নামের ক্ষেপণাস্ত্রটি ২৭ কিলোমিটার পর্যন্ত উঁচুতে উঠতে এবং ১২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারবে বলে দেহঘান জানিয়েছেন।
ক্ষেপণাস্ত্রটি যুদ্ধবিমান, অজ্ঞাত উড়ন্ত যান, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র কিংবা হেলিকপ্টারের মত লক্ষ্যবস্তুতে সহজেই আঘাত হানতে পারবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনের আরোপ করা অর্থনৈতিক অবরোধের পাল্টায় তেহরানের কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র বানানোর এ ঘোষণা এলো। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে মদদ দেওয়ার অভিযোগে ইরানের ওপর ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির অপতৎপরতা সমর্থনকারী ১৮ টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি নতুন এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে বলে এক বিবৃতিতে জানায় মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া প্রতিষ্ঠানগুলো ইরানের সামরিকবাহিনী এবং রেভ্যুলেশনারি গার্ডকে ড্রোন এবং সামরিক সরঞ্জাম নির্মাণ, নৌযান উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সাহায্য করে আসছিল বলেও ওই বিবৃতিতে বলা হয়।
২০১৫ সালে পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে চুক্তি করে ইরান। ইরান ওই চুক্তির শর্ত দৃশ্যত মেনে চললেও চুক্তির মর্ম অনুসরণ করছে না বলে গত সোমবার অভিযোগ করে ট্রাম্প প্রশাসন।
জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের চুক্তি মেনে চলার স্বীকৃতি দিল। অথচ নির্বাচনী প্রচারণাকালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ‘সবচেয়ে নিকৃষ্ট একটি চুক্তি’ করেছেন বলে এর সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প।
অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন মূলত ছয়জাতির চুক্তি অক্ষুণ্ন রেখেই ইরানের ওপর চাপ বাড়ানোর চিন্তা করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
দুই বছর আগের ওই চুক্তিতে ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো।
শনিবারের ওই অনুষ্ঠানে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দেহঘান যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষর হওয়া ১১০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক চুক্তিরও সমালোচনা করেন।
রিয়াদে ট্রাম্পের উপস্থিতিতে মে মাসে হওয়া চুক্তিটি ইরানের জন্য হুমকিস্বরূপ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।