আসাদবিরোধীদের সিআইএর অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করলেন ট্রাম্প

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদবিরোধী বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার যে গোপন কর্মসূচি চার বছর ধরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ চালিয়ে আসছিল, তা সাময়িকভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2017, 06:30 AM
Updated : 20 July 2017, 06:58 AM

সিআইএ-র কর্মসূচির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

অনেকদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এ পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল আসাদ সমর্থক রাশিয়া।

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে ট্রাম্প প্রশাসনের চেষ্টার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের ওই কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন মন্তব্য করেছেন।

সিরিয়ায় ছয় বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পরও আসাদ সরকারকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বিরাট সাফল্য দেখিয়েছে রাশিয়া ও ইরান সমর্থক গোষ্ঠীগুলো।

২০১৩ সাল থেকে সিরিয়ার সরকার বিরোধীদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছিল সিআইএ।

আসাদকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের ওই কর্মসূচি চার বছরেও তেমন সাফল্যের মুখ দেখেনি বলে জানিয়েছেন ওই দুই কর্মকর্তা।

সিআইএর অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ তৎপরতা বন্ধ করা হলেও যে সিরীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী প্রশিক্ষণ, অস্ত্র এবং বিমান হামলাসহ নানা ধরনের সহযোগিতা করে আসছে তা অব্যাহত থাকবে বলে তারা জানিয়েছেন।

বুধবার ওয়াশিংটন পোস্ট প্রথম সিআইএর এই অস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

পরে হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্সকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। সিআইএর কর্তৃপক্ষও প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

জি-২০ সম্মেলনে ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার ও সিআইএ-র পরিচালক মাইক পম্পেও নিচের সারির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আসাদবিরোধীদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের এ সিদ্ধান্ত নেন।

এর সঙ্গে পরে দক্ষিণ-পশ্চিম সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতির কোনো সম্পর্ক নেই বলে কর্মসূচিঘনিষ্ঠ ওই দুই কর্মকর্তা জানান। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে দরকষাকষির পর ওই অস্ত্রবিরতি ঘোষিত হয়।

আসাদকে সুবিধা দিতে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন এ সিদ্ধান্ত নেয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন এক কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, “এটি পুতিনের জন্য সংকেত, যা বোঝাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহী।”

ট্রাম্প প্রশাসন এমন এক সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিল যখন ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ এবং রিপাবলিকান প্রচারণা শিবিরের সঙ্গে তাদের যোগসাজশের অভিযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ও বিচার বিভাগের তদন্ত চলছে।

চলতি বছর জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার আগেও ট্রাম্প ফ্রি সিরিয়ান আর্মি থেকে সমর্থন প্রত্যাহার এবং ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।