সৌদি আরব-কাতার দ্বন্দ্ব বাড়ছেই

নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে কাতারকে দেওয়া শর্ত নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনায় রাজি না হওয়ায় প্রতিবেশী দেশগুলোর সমালোচনা করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আল থানি।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2017, 12:01 PM
Updated : 28 June 2017, 12:01 PM

তিনি বলেন, তাদের অবস্থান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক নীতির সঙ্গে ‘সাংঘর্ষিক’।

কাতার ‘সন্ত্রাসবাদের মদদদাতা’ অভিযোগ তুলে গত ৫ জুন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, ইয়েমেন ও মিশর দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

যদিও কাতার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত ২৩ জুন ইয়েমেন ছাড়া বাকি চার দেশ কাতারের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ১৩টি শর্তের একটি তালিকা দোহায় পাঠায়।

শর্তগুলোর মধ্যে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাসের পাশাপাশি কাতার সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত আল জাজিরা টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়ার কথাও রয়েছে।

এছাড়া কাতারে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেওয়া এবং দেশটিতে অবস্থান করা ওই চার দেশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের হস্তান্তরের দাবিও জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন আরব দেশগুলোকে দ্রুত এই সঙ্কট নিরসনের তাগিদ দিয়েছেন।

তবে তিনি স্বীকার করেছেন, কাতারকে দেওয়া শর্তের মধ্যে কয়েকটি পূরণ করা দোহার জন্য ‘খুবই কঠিন’।

কিন্তু এখনও সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্র রয়েছে যা আলোচনা শুরুর ভিত্তি হতে পারে বলে মনে করেন টিলারসন।

বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে টিলারসনের সঙ্গে বৈঠক করেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর।

এ সময় সাংবাদিকরা তাকে কাতারকে দেওয়া শর্ত নিয়ে আলোচনা সম্ভব কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আলোচনা সম্ভব নয়। এর মধ্যে জটিলতার কিছু নেই। আমরা আমাদের চাহিদা জানিয়েছি। আমরা আমাদের কাজ করে ফেলেছি। কাতার তাদের আচরণ সংশোধন করবে কিনা সেটা এখন তাদের উপর নির্ভর করছে।”

“যদি তারা সেটা করে তবে সবকিছু আবার ঠিকঠাক মত চলবে। কিন্তু যদি তারা সেটা না করে তবে তাদের একঘরে হয়ে থাকতে হবে। যদি কাতার গল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিলে ফিরে আসতে চায়, তারা জানে তাদের ঠিক কি করতে হবে।”

ওই দিনই পরে টিলারসনের সঙ্গে দেখা করেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল থানি।

তিনি বলেন, সৌদি আরবের অবস্থান ‘অগ্রহণযোগ্য’।

“যে নীতির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালিত হয় এটা তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আপনি শুধুমাত্র শর্তের তালিকা দেবেন কিন্তু আলোচনা করবে না তা কি করে হয়।”

আল থানি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রও একটি ‘দায়িত্বশীল ও বাস্তবায়নযোগ্য’ তালিকা দেওয়ার কথা বলেছে এবং কাতারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন বলেও মত তাদের।

এদিকে রাশিয়ায় নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত দৈনিক গার্ডিয়ানকে বলেন, আরব দেশগুলো কাতারের উপর নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে।

“যদি কাতার আমাদের শর্ত না মানে সেক্ষেত্রে আমরা কাতারকে বিদায় জানিয়ে বলবো, আমাদের দলে তোমাকে আর প্রয়োজন নেই।”