হিজবুল মুজাহিদিনের নেতা যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকায়

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরভিত্তিক সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের শীর্ষ নেতা সৈয়দ সালাহউদ্দিনকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2017, 05:46 AM
Updated : 27 June 2017, 05:52 AM

এনডিটিভি বলছে, হোয়াইট হাউজে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ৭১ বছর বয়সী সালাহউদ্দিনকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা দেয়।

এর মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন পাকিস্তানের প্রতি কঠোর বার্তা দিল বলে মনে করছে ভারত। সালাহউদ্দিন পাকিস্তানের মদতে দীর্ঘদিন ধরে ভারতবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন বলে নয়া দিল্লির অভিযোগ। 

মোদীর সফরের আগে আগে হিজবুল মুজাহিদিন প্রধানকে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার ঘটনাকে কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখছে ভারত।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গোপাল ভাগলে বলেছেন, “কাশ্মীরে গত বছর থেকে শুরু হওয়া অস্থিরতার পেছনে সীমান্ত সন্ত্রাসের হাত আছে, দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত সন্ত্রাস নিয়ে ভারতের অবস্থানের স্বীকৃতি মিলল যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তে।”

সালাহউদ্দিনের সংগঠন, হিজবুল মুজাহিদিন জন্মলগ্ন থেকেই পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর থেকে ভারতের বিরুদ্ধে সীমান্ত সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ভাগলে।

তিনি বলেন,“ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই সন্ত্রাসের ঝুঁকির মুখে আছে। দুটি দেশই এই ঝুঁকির মোকাবিলায় বৈশ্বিকভাবে কাজ করছে, কারণ সন্ত্রাসবাদের কোনো সীমানা নেই। সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা।”

যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায়ও ভারতীয় ভাষ্যের প্রতিধ্বনি মিলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষণায় বলা হয়, “২০১৬-র সেপ্টেম্বরে সালাহউদ্দিন কাশ্মীর সংকটের যে কোনো শান্তিপূর্ণ সমাধান বাধাগ্রস্ত করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। আরো কাশ্মীরি আত্মঘাতী বোমাবাজকে প্রশিক্ষিত করে ভারতে পাঠানো এবং কাশ্মীর উপত্যকাকে ভারতীয় সৈন্যদের জন্য মৃত্যু উপত্যাকায় পরিণত করার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।”

যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক সন্ত্রাসী তালিকায় নাম ওঠার মানে হলো, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কালো তালিকাভুক্ত ওই ব্যক্তি বা সংগঠনের সঙ্গে কোনো ধরনের অর্থনৈতিক লেনদনে করতে পারবে না এবং এর মাধ্যমে ওই সন্ত্রাসী ব্যক্তি বা সংগঠনকে মদদ দিচ্ছে এমন দেশগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। 

এ ঘোষণার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সালাহউদ্দিনের সঙ্গে সবধরনের লেনদেন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লো। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে সালাহউদ্দিনের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও সালাহউদ্দিনের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল কিছুর কার্যক্রম স্থগিত হলো।

যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে বলা হয়, হিজবুল মুজাহিদিন বেশ কয়েকটি মারাত্মক সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত, যার মধ্যে ২০১৪ সালে জম্মু ও কাশ্মীরে বোমা হামলার ঘটনাও আছে, যাতে ১৭ জন আহত হয়েছিল।

মধ্য কাশ্মীরের বুদগাম জেলার বাসিন্দা সালাহউদ্দিন ১৯৮৯ সালে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে চলে যান এবং তারপর থেকে ভারত নিয়ন্ত্রিত অংশে ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন বলে  অভিযোগ ভারতের। 

নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে যে ইউনাইটেড জিহাদ কাউন্সিল পরিচালিত হয়ে আসছে সালাহউদ্দিন তারও প্রধান।