ক্ষমতা টেকাতে বিলিয়ন পাউন্ডের চুক্তিতে মে

ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নর্দান আয়ারল্যান্ডের দল ডিইউপির এমপিদের সমর্থন লাভের জন্য প্রদেশটিতে অতিরিক্ত এক বিলিয়ন পাউন্ড (১৩০ কোটি ডলার) বরাদ্দের চুক্তি করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2017, 11:31 AM
Updated : 26 June 2017, 02:27 PM

যুক্তরাজ্যে গত ৮ জুনের আগাম নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় মে’র দল কনজারভেটিভ পার্টি। এরপর প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে দর কষাকষির পর সোমবার ডাউনিং স্ট্রিটে দুই পক্ষের মধ্যে এই চুক্তি হয়।

এখন ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি (ডিইউপি) এবং এর ১০ জন এমপি মে’র সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাবে, যদিও তাদের অংশীদারিত্বে জোট সরকার হচ্ছে না।

টেরিজা মে ও ডিইউপি নেতা আরলিন ফস্টারের সভাপতিত্বে কনজারভেটিভ নেতা গেভিন উইলিয়ামসন ও অপরপক্ষের জেফরে ডোনাল্ডসন চুক্তিতে সই করেন, যা ২০২২ সাল পর্যন্ত মেয়াদ থাকা বর্তমান পার্লামেন্ট চালু রাখতে রসদ যুগিয়ে যাবে। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উভয়পক্ষের নেতাদের মুখে ছিল হাসি, কৌতূকও করেন তারা।

চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে এক বিবৃতিতে টেরিজা মে বলেন, “এই চুক্তি পুরো যুক্তরাজ্যের স্বার্থে আমাদের একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ করে দেবে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার যে প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি তা এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় নিশ্চয়তা দেবে এবং দেশে আরও শক্তিশালী ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে সহায়তা করবে।”

চুক্তির শর্ত মতে, আগামী দুই বছরে নর্দান আয়ারল্যান্ডে সরকারি ব্যয় এক বিলিয়ন পাউন্ড বাড়াবেন মে। বিনিময়ে বাজেট, ব্রেক্সিট আইন, জাতীয় নিরাপত্তাসহ মে’র সামগ্রিক লেজিসলেটিভ পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়ে যাবে ডিইউপি।

ডাউনিং স্ট্রিটে ডিইউপি নেতা আরলিন ফস্টার বলেন, “পার্লামেন্টে সরকারকে সমর্থনের বিষয়ে কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে আমরা আজকে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি।”   

গতবছর ব্রেক্সিট নির্বাচনের অপ্রত্যাশিত ফলাফলের পর ডেভিড ক্যামেরন সরে গেলে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন টেরিজা মে। তার লক্ষ্য ছিল পার্লামেন্টে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করা, যাতে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়।

কিন্তু আগাম নির্বাচনে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ৩২৬ আসনের চেয়ে আটটি আসন কম পায় মে’র কনজারভেটিভ পার্টি। তারা এবার ৩১৮টি আসন যায়, যা গতবারের চেয়ে ১৩টি কম।

ডিইউপির এমপিদের সমর্থন নিয়ে ৬৫০ আসনের পার্লামেন্টে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারছেন টেরিজা মে। তবে তার ভবিষ্যৎ থেকে অনিশ্চয়তার মেঘ সরছে না বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ভাষ্য। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, মে কীভাবে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছেন তার প্রতি কঠোর নজর থাকবে, পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার ভবিষ্যৎ জনগণের বিতর্কের বিষয়বস্তু হয়ে উঠবে।

তাছাড়া ডিইউপির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন কনজারভেটিভ পার্টির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা। তারা বলছেন, নতুন এই চুক্তি ‘গুড ফ্রাইডে এগ্রিমেন্ট’ নামে পরিচিত নর্দান আয়ারল্যান্ডে ১৯৯৮ সালের পিস সেটেলমেন্টকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।