আগামী বছর নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে ‘জীবনের উদ্ভব ও বিবর্তনবাদ’ নামে একটি পরিচ্ছেদ বাদ দেওয়ার কথা দেশটির জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের প্রধান আলপাসলান দারমাস জানিয়েছেন।
রয়টার্স বলছে, প্রেসিডেন্ট রিজেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের নেতৃত্বে ইসলামপন্থী একে পার্টির সরকার ২০০২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে নানা রক্ষণশীল কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আধুনিক তুরস্কের সেক্যুলার ভিত ধ্বংস করে দিচ্ছে বলে সমালোচনা রয়েছে।
সর্বশেষ জীববিজ্ঞানের অবশ্যপাঠ্য ডারইউনের তত্ত্ব বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘মুক্তমতের প্রতি অসহিষ্ণুতা’ ও ‘ধর্মান্ধতা’ আখ্যা দিয়ে তুরস্কের অনলাইন ফোরামগুলোতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন, বিবর্তনবাদ না পড়িয়ে জীববিদ্যা পড়ানো কীভাবে সম্ভব।
অনলাইন ফোরামে একজনের মন্তব্য উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছে, আধুনিক বিজ্ঞানের এই মৌলিক তত্ত্বকে ‘বিতর্কিত’ বলা হচ্ছে- এটা অকল্পনীয়।
তুরস্কে এমনিতেই ‘বিবর্তনবাদ’ গুরুত্ব দিয়ে পড়ানো হচ্ছে না জানিয়ে আরেক সমালোচক নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
“একবার ক্লাসে স্যার আমাদেরকে বললেন, তোমাদের কে কে বিবর্তনবাদে বিশ্বাস কর? আমি হাত তুললাম। স্যার বললেন, তুমি কি তাহলে বানর?”
উল্টো দিকে সরকারের উদ্যোগে সমর্থন জানিয়ে ফেইসবুকে একজন লিখেছেন, “পচা ও অর্থহীন তত্ত্বটিকে পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।”
জাতীয় পাঠ্যক্রমে পরিবর্তনের এই প্রস্তাব প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এর মধ্যেই অনুমোদন করেছেন, যা আগামী সপ্তাহে প্রকাশ করা হচ্ছে।
এর সমালোচনা করে শিক্ষক ইউনিয়নের প্রধান ফেরাই এতেকিন এদোয়ান বলেন, “সৌদি আরবের পর তুরস্ক হবে দ্বিতীয় দেশ যারা বিবর্তনবাদ পড়ানো বন্ধ করে দিচ্ছে। এমনকি ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানেও বিবর্তনবাদ ও ডারউইনের ওপর মোট ৭১ ঘণ্টা পড়ানো হয়।”