পুরনো মসুলের কেন্দ্রস্থলের দিকে এগোচ্ছে ইরাকি বাহিনী

মসুলের পুরনো শহরের কেন্দ্রস্থলের দিকে চলে যাওয়া দুটি সড়ক ধরে লড়াই করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছে ইরাকি বাহিনী।

>>রয়টার্স
Published : 24 June 2017, 10:32 AM
Updated : 24 June 2017, 10:32 AM

এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শহরটিতে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শেষ ওই অবস্থানস্থলে আটকা পড়া বেসামরিকদের পালিয়ে যাওয়ার পথ খোলার চেষ্টাও তারা করছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে সরকারি বাহিনীটি।

শুধুমাত্র শহরের ওই অংশটি এখনও সুন্নি জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের নিয়ন্ত্রণে রয়ে গেছে। শহরের পথে যুদ্ধ করার কৌশলগুলোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক প্রশিক্ষিত ইরাকি বাহিনীর বিশেষ কয়েকটি ইউনিট শহরের ওই অংশটির দিকে এগিয়ে যাওয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।

ইরাকি কর্তৃপক্ষ আশা করছে, ঈদের দিনই ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরটি পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে জয় হয়েছে বলে ঘোষণা দিতে পারবে তারা।

সামরিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, বুধবার আইএসের জঙ্গিরা ৮৫০ বছর পুরনো নুরি মসজিদ উড়িয়ে দেওয়ার পর এর সুবিধা পেযেছে সরকারি বাহিনী, এতে তাদের অগ্রসর হওয়ার গতি বেড়ে গেছে।

মসজিদটি ধ্বংস করে দেওয়ায় সরকারি বাহিনী এখন কোনো উদ্বেগ ছাড়াই আক্রমণ চালিয়ে পুরনো শহরের কেন্দ্রস্থলের দিকে এগিয়ে যেতে পারছে, কারণ তাদের আক্রমণে পুরনো ওই মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আর কোনো আশঙ্কা নেই।

তিন বছর আগে এই নূরি মসজিদ থেকেই আইএসের দলনেতা আবু বকর আল বাগদাদি ইরাক ও সিরিয়ার দখলকৃত অংশে ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল।

ইরাকে আইএসের রাজধানী বলে পরিচিত মসুল থেকে জঙ্গিদের হঠাতে গত আট মাস ধরে অভিযান চালাচ্ছে ইরাকি বাহিনী। অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী তাদের সমর্থন দিচ্ছে।

ইরাকি বাহিনীগুলোর গণমাধ্যম শাখার প্রকাশিত একটি মানচিত্রে দেখা গেছে, ইরাকি বাহিনীর সন্ত্রাস বিরোধী ইউনিটগুলো উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে আল ফারুক সড়ক ধরে এবং পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে নিনেভ সড়ক ধরে পুরনো শহরের কেন্দ্রস্থলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

এই দুটি সড়ক মসুলের পুরনো শহরের কেন্দ্রস্থলে পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ইরাকি বাহিনীর ইউনিটগুলো ওই কেন্দ্রস্থলে হাজির হতে পারলে আইএসের জঙ্গিদের ওই এলাকার চারপাশে চারটি পকেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারবে।

এই এলাকাগুলোর পুরনো বাড়িগুলোতে লাখখানেকেরও বেশি বেসামরিক মানুষ আটকা পড়ে আছে। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা অপ্রতুলতার মধ্যে উৎকণ্ঠিতভাবে সময় পার করছে তারা।

চলতি সপ্তাহে ইরাকি বাহিনী এসব এলাকার প্রায় সাত হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।

সরকারি বাহিনীর এ আগ্রযাত্রার প্রতিশোধ হিসেবে শুক্রবারে ইউফ্রেতিস নদীর অপর তীরে পূর্ব মসুলে তিনটি আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় আইএসের জঙ্গিরা। তিন জঙ্গির চালানো এ হামলায় বহু মানুষ হতাহত হলেও তাদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।