রাজপরিবারের কেউই মুকুট পরতে চান না: প্রিন্স হ্যারি

ব্রিটিশ রাজপরিবারের কারও মধ্যেই রাজা বা রানি হওয়ার আগ্রহ নেই এবং প্রকৃতপক্ষে কেউই মুকুট পরতে চান না বলে জানিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2017, 02:27 PM
Updated : 23 June 2017, 02:27 PM

‘নিউজউইক ম্যাগাজিন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হ্যারি একথা বলেন।

সাক্ষাৎকারে হ্যারি এও জানান, আগ্রহ না থাকলেও যার উপরই শেষ পর্যন্ত রাজত্ব সামলানোর ভার পড়ুক, দায়িত্ব পালনে তিনি কসুর করবেন না।

"আমরা এখন ব্রিটিশ রাজত্বের আধুনিকায়নে কাজ করছি। আমাদের জন্য নয়, এটি আমরা করছি জনগণের বৃহত্তর মঙ্গলের কথা বিবেচনা করে।

"রাজপরিবারে কি এখন এমন কেউ আছে যে রাজা বা রানি হতে চায়? আমার মনে হয় না। যদিও সঠিক সময়ে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করব”, বলেন ৩২ বছর বয়সী এ রাজপুত্র।

হ্যারি রাজপরিবারের এখনকার অবস্থানের জন্য রানি এলিজাবেথেরও প্রশংসা করেন। বলেন, ব্রিটিশ রাজপরিবার ভাল যে কোনো কিছুর জন্য ইতিবাচক শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে।

"গত ৬০ বছর ধরে রানি যা অর্জন করেছেন অামরা তা এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব, যদিও অামরা তার বুট জুতার সমান কাজ করতেও এখন পর্যন্ত চেষ্টা করিনি।"

কেনসিংটন প্রাসাদে দেওয়া এ সাক্ষাৎকারে রাজপরিবার ছাড়াও হ্য্যারি তার ব্যক্তিগত সব বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। প্রিন্স হ্যারি ছাড়া অন্য কিছু হওয়ার বাসনা ছিল তার, একথাও কয়েকবার বলেন তিনি। বলেন আম আদমি হওয়ার ইচ্ছার কথা।

বলেন তার মা, অর্থাৎ, প্রিন্সেস ডায়ানার কাছ থেকে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন। লেডি ডায়না ছোটবেলায় তাকে আর তার ভাই উইলিয়ামকে গরিব মানুষের কাছে নিয়ে যেতেন। বলতেন, তাঁদের জীবন যন্ত্রণা অনুভব করতে শিখতে। প্রিন্সরা যে জন্মগত বিশেষ সুবিধার অধিকারী তা চিরকাল মনে রাখতে।

২০ বছর অাগে ১২ বছর বয়সে মায়ের কফিনের পেছনে হেঁটে যাওয়ার সময়কার মাতৃবিয়োগের যন্ত্রণার কথাও বলেন হ্যারি।। তিনি িএখনও চান 'কোনও শিশুকে যেন কোনও পরিস্থিতিতে এমন কিছু করতে না হয়'।

১৯৯৭ সালের ওইদিন হ্যারি হেঁটেছিলেন তার বাবা প্রিন্স চার্লস, দাদা প্রিন্স ফিলিপ, ১৫ বছর বয়সী বড়ভাই প্রিন্স উইলিয়ামসহ রাজপরিবারের অারও অনেক বয়োজ্যেষ্ঠর সঙ্গে।

লন্ডনের রাস্তায় সেদিন প্রিন্সেস ডায়ানাকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন লাখো মানষ, টিভি পর্দায় চোখ ছিল অারও অনেকের।

হ্যারি বলেন, "অামার মা তখন সদ্যই মারা গেছেন। অামাকে তার কফিনের পেছনে দীর্ঘ পথ হাঁটতে হয়েছিল। সবাই অামাকে দেখছিল।”

মায়ের মৃত্যুর পর কিছুদিন মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন বলেও জানান হ্যারি, পরে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠেন।

হ্যারি বলেন, "মা যখন মারা যায় তখন অামি খুব ছোট। যে রাজকীয় অবস্থানে ছিলাম, তা অামি চাইনি। তবে কিছুদিনের মধ্যেই অামি বালি থেকে মুখ তুলে তাকাই, অাশপাশের সবার পরামর্শ নিয়ে অামার অবস্থানকে ভাল কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিই।

"এখন অামি  ভাল অাছি, দাতব্য কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে ভালোবাসি; ভালোবাসি লোকজনের সঙ্গে মিশতে অার তাদের হাসাতে।”