সংস্থাটি তাদের বাৎসরিক প্রতিবেদনে ২০১৬ সালের শেষ নাগাদ উদ্বাস্তু মানুষের এ পরিসংখ্যান দিয়েছে, যা ২০১৫ সালের চেয়ে ৩ লাখ বেশি।
তবে ২০১৪-২০১৫ সালের তুলনায় এ সংখ্যাবৃদ্ধি হয়েছে কমই। কারণ, ওই দুই বছরে উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা বেড়েছিল ৫০ লাখ।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি বলেছেন, “এটি এখনও আন্তর্জাতিক কূটনীতির নৈরাশ্যজনক ব্যর্থতা। শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব অপারগ হয়ে পড়েছে বলেই মনে হচ্ছে।”
“কেননা, আপনারা দেখুন- পুরোনো সংঘর্ষ চলছেই, নতুন সংঘর্ষ মাথা চাড়া দিচ্ছে। উভয় কারণেই মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য হওয়াটা যুদ্ধেরই প্রতীক, যার কোনও শেষ নেই।”
২০১৬ সালে দক্ষিণ সুদান থেকে প্রতিবেশী উগান্ডায় পালিয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। যে কোনও দেশের উদ্বাস্তু মানুষের তুলনায় এ সংখ্যা বেশি। এমনকি সিরিয়া থেকে পালানো মানুষের সংখ্যার চেয়েও বেশি। সিরিয়া থেকে পালানো মানুষের সংখ্যা ২ লাখ।
শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি সতর্ক করে বলেছেন, উদ্বাস্তু মানুষের চাপ নিতে হচ্ছে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোকে। বিশ্বের দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ৮৪ শতাংশ উদ্বাস্তু রয়েছে।
তিনি প্রশ্ন করে বলেন, “ধনী দেশগুলো যেখানে উদ্বাস্তু নিতে উদ্যোগী হচ্ছে না, সেখানে আমি কীভাবে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার স্বল্পন্নোত দেশগুলোকে লাখ লাখ উদ্বাস্তু নিতে বলব?”
সোমবার প্রকাশিত রেকর্ড সংখ্যক উদ্বাস্তুর এ হিসাব ধনী দেশগুলোকে আবার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে উৎসাহ যোগাক এবং শুধু আরও বেশি শরণার্থী নেওয়াই নয়, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পুনর্নির্মাণে ধনী দেশগুলো বেশি বেশি বিনিয়োগ করুক এমনটিই আশা করছে জাতিসংঘ।
বিশ্বে উদ্বাস্তু মানুষের পরিসংখ্যান:
যুক্তরাজ্যের মোট জনসংখ্যার চেয়ে বর্তমানে উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা বেশি
১. ২ কোটি ২৫ লাখ শরণার্থী
২. নিজ দেশে বাস্তুহারা ৪ কোটি ৩ লাখ
৩. আশ্রয়প্রার্থী ২৮ লাখ
শরণার্থীরা কোথা থেকে এসেছে?
১. সিরিয়া : ৫৫ লাখ
২. আফগানিস্তান : ২৫ লাখ
৩.দক্ষিণ সুদান ১৪ লাখ
শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে কারা?
১. তুরস্ক : ২৯ লাখ
২. পাকিস্তান : ১৪ লাখ
৩. লেবানন : ১০ লাখ
৪. ইরান : ৯৭ লাখ ৯৪ হাজার
৫. উগান্ডা : ৯ লাখ ৪০ হাজার ৮শ’
৬. ইথিওপিয়া : ৭ লাখ ৯১ হাজার ৬শ’
৭. সিরিয়ায় আরও ৬৩ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীনভাবে বাস্তুচ্যুত