লন্ডন ভবনের মর্মান্তিকতা দীর্ঘদিনের অবহেলার ফল: সাদিক খান

গ্রেনফেল টাওয়ারের মর্মান্তিক অগ্নিকান্ডকে স্থানীয় কাউন্সিল ও সরকারের ‘বছরের পর বছর ধরে অবহেলার’ ফল বলে উল্লেখ করেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। তার মতে এ দুর্ঘটনা ‘এড়ানো যেত’।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2017, 04:40 PM
Updated : 18 June 2017, 04:40 PM

অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে রোববার স্থানীয় একটি গির্জায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মেয়র সাদিক একথা বলেন। তিনি বলেন, “এই অগ্নিকাণ্ড একটি জাতীয় দুর্যোগ ছিল এবং জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব দিয়ে এর মোকাবেলা করা প্রয়োজন ছিল।”

আগুন লাগার পর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ও কাউন্সিল যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলেও অভিযোগ করেন লন্ডনের মেয়র সাদিক।

তিনি বলেন, “জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে। তাদের ক্ষোভ শুধু দুর্ঘটনার পর তা মোকাবেলায় কাউন্সিল ও সরকারের দুর্বল পদক্ষেপের কারণে নয় বরং বছরের পর বছর ধরে কাউন্সিলের অবহেলাও তাদের ক্ষোভের কারণ।”

“মনে হচ্ছে, কাউন্সিল ও সরকার ভবনটির বাসিন্দাদের উদ্বেগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি এবং এটি নিয়ে তাদের কোনো ‍মাথাব্যাথা ছিল না।”

গত মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর পূর্ব লন্ডনে অবস্থিত ২৪তলা ভবনটিতে আগুন লাগে। পরদিন দুপুরের পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে ৫৮ জন প্রাণ হারিয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। তবে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭০ এর কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিবিসি।

মেয়র সাদিক খান বলেন, “এ অগ্নিকান্ড একের পর এক ভুল আর রাজনীতিবিদ, স্থানীয় কাউন্সিল ও সরকারের অবহেলার ফল।”

অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া ২৪ তলা ভবনটির বাসিন্দাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কাজের গতি বাড়াতে কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা সেখানে গেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এ দুর্ঘটনার পূর্ণ সরকারি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। কেনসিংটন কাউন্সিল তদন্তে পূর্ণ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

আগুনে ভবনটি পুরোপুরি পুড়ে যাওয়ায় যে কোনো সময়ে ধসের আশঙ্কায় সেখানে খুব সাবধানে উদ্ধার কাজ চলছে। উদ্ধার কাজ শেষ হতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।

ভবনে আগুন লাগার পর দুর্যোগ মোকাবেলায় কেনসিংটন কাউন্সিলের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কাউন্সিলের কর্মকর্তারা দুর্গতদের খুব সামান্য সহায়তাই করেছে। এমনকি দুর্ঘটনা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যও তারা দেয়নি।

জবাবে কাউন্সিল নেতা নিক প্যাগেট-ব্রাউন বলেন, ভবনে আগুন লাগার পর ‘খুব দ্রুত’ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা বুধবার পর্যন্ত বিরতিহীনভাব কাজ করেছেন।

অগ্নিকাণ্ডের পর বেঁচে যাওয়াদের কাছ থেকে দেখতে না গিয়ে জোট সরকার গঠনে ডিইউপির সঙ্গে দর কষাকষিতে ব্যস্ত থাকা টেরিজা মে’কে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। দলের নেতারাই মে’র এ আচরণ মেনে নিতে পারছেন না।

আগাম নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো মে নর্থ আয়ারল্যান্ডের দল ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির (ডিইউপি) সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছেন।