হেলমুট কোল: দুই জার্মানি পুনরেকত্রীকরণের স্থপতির মৃত্যু

পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানি একত্রিকরণের কারিগর, জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর হেলমুট কোল মারা গেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2017, 05:58 AM
Updated : 17 June 2017, 05:58 AM

শুক্রবার জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাইনল্যান্ড-পালাতিন্টের লুদভিগসা শহরের নিজ বাড়িতে ৮৭ বছর বয়সে  তার মৃত্যু হয় বলে জার্মানির বিল্ড পত্রিকার বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।

কোলের ১৬ বছরের শাসনামলেই বহুল আলোচিত বার্লিন দেয়ালের পতন ঘটে। ফরাসী মিত্র ফ্রাঁসোয়া মিতেঁরের সঙ্গে একত্রিত হয়ে তিনি ইউরোপের জন্য অভিন্ন মু্দ্রা ইউরোর প্রচলন করেন। এজন্য জার্মানির নিজস্ব মুদ্রা ডয়েশমার্ক বিসর্জন দিতেও বিচলিত হননি। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কট্টর এ সমর্থকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জ্যঁ-ক্লদ জাঙ্কার। কোলের মৃত্যুতে ইইউর পতাকা অর্ধনমিত রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

১৯৩০ সালে রক্ষণশীল ক্যাথলিক পরিবারে জন্ম নেওয়া কোল ১৯৮২ সালে মধ্য-ডানপন্থী খ্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক দলের নেতা হিসেবে জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে শপথ নেন।

টানা ১৬ বছর চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ১৯৯৮ সালে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন কোল। বিভিন্ন গোপন ব্যাংক হিসাব থেকে অবৈধভাবে দলের জন্য লাখ লাখ ডলার অনুদান নেওয়ার অভিযোগ মাথায় নিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে যান তিনি। 

২০০৮ সালে পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়ার পর থেকে হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতেন তিনি।

বিবিসি বলছে, ইইউ নিয়ে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের সঙ্গে কোলের বিরোধে জড়িয়ে পড়ার কথা এখনও অনেকেই স্মরণ করেন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধর ৭০তম বার্ষিকীতে ভার্দুন ওয়ার মেমোরিয়ালে অনুষ্ঠিত এক স্মরণসভায় তৎকালীন ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেঁরের হাত ধরে ফরাসী জনগণেরও মন জয় করেছিলেন তিনি।

জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল ১৯৯১ সালে কোলের খ্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক দলীয় সরকারের নারী ও যুব বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে রাজনৈতিক অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলেন।

অবৈধ অর্থ অনুদান নেওয়ার অভিযোগে কোলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মের্কেল পরে মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন।

কোলের মৃত্যুতে দেওয়া এক শোকবার্তায় মের্কেল বলেছেন, “গত শতকে জার্মান রাজনীতিতে দুটি সাফল্যের পালক যোগ করেছেন হেলমুট কোল, একটি জার্মানির পুনরেকত্রীকরণ আর অন্যটি ইউরোপের ঐক্য। এই দুটি বিষয় একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, কোল তা জানতেন।”

কোলের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশ(বুশ সিনিয়র)।

১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে কোলকে ‘মুক্তিসংগ্রামের সত্যিকার বন্ধু’ হিসেবে পেয়েছেন জানিয়ে বুশ তাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ইউরোপের ‘অন্যতম সেরা নেতা’ অভিহিত করেছেন।