ম্যানচেস্টারে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, হামলার নিন্দায় মে

যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার এরিনায় কনসার্টে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ২২ জনকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের খুঁজতে শহরের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে এ হামলাকে শিশু ও তরুণদের ওপর চালানো অসুস্থকর কর্মকান্ড বলে এর নিন্দা জানিয়েছেন।

>>রয়টার্স
Published : 23 May 2017, 05:03 PM
Updated : 23 May 2017, 07:22 PM

পশ্চিমা-সমর্থিত সশস্ত্র বাহিনী ইরাক এবং সিরিয়া থেকে ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) উচ্ছেদ করতে থাকায় এ জঙ্গি গোষ্ঠীটি এখন ‘ক্রুসেরডারদের’ বিরুদ্ধে বদলা নিতে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে এর দায় স্বীকার করেছে।

কিন্তু পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা এখনও এ দাবি যাচাই করে দেখতে পারেন নি। আর ব্রিটিশ নিরাপত্তা বাহিনীও আরও বড় কোনও দল হামলায় জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন মে। ‍

মঙ্গলবার টেলিগ্রামে ইসলামিক স্টেট দায় স্বীকার করে যে বার্তা দিয়েছে তার সঙ্গে ব্রিটিশ পুলিশের দেওয়া বোমা হামলাকারীর বর্ণনার মিল নেই। তাছাড়া, টেলিগ্রামের বার্তায় পরবর্তীতে আরও হামলারও হুমকি আছে। বার্তায় তারা বোমা হামলাকারীর নামও জানায়নি। তাদের নির্দেশে চালানো হামলাগুলোতে যেটি তারা সাধারণত করে থাকে।

অন্যদিকে, আইএসের আমাক বার্ত সংস্থায় পোস্ট করা বার্তাতেও গরমিল দেখা গেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘একদল হামলাকারীর’ কথা। পরে আবার এ পোস্টটি সাইট থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

ডাউনিং স্ট্রিটে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী মে বলেছেন, পুলিশের ধারণা, তারা বোমা হামলাকারীর পরিচয় জানে।

হামলার নিন্দায় তিনি বলেন, “সব সন্ত্রাসী কর্মকান্ডই কাপুরুষোচিত। কিন্তু এ হামলাটি আরও ভয়াবহ একটি অসুস্থকর কাপুরুষোচিত হামলা। যাতে ইচ্ছাকৃতভাবে নির্দোষ, নিরীহ শিশু এবং তরুণদেরকে হামলার লক্ষ্য করা হয়েছে। যাদের জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় রাতটি উদযাপনের কথা ছিল।”

হামলার পরপরই ব্রিটিশ পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২৩ বছর বয়সী একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা ফালোফিল্ডেও একটি বাড়িতে তল্লাশি চালায় এবং নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটায়। হলওয়ে রেঞ্জ এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে, সশস্ত্র পুলিশ নতুন বানানো একটি এপার্টমেন্ট ব্লক ঘিরে রেখেছে।

উত্তরাঞ্চলীয় ইংলিশ সিটিতে উচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে। মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশও। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেছেন, রাজধানীতে আরও পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে ম্যানচেস্টার এরিনায় কনসার্ট শেষ হওয়ার পরপরই বিস্ফোরণে আট বছর বয়সী একটি মেয়েসহ ২২ জন নিহত এবং ৫৯ জন আহত হন। যুক্তরাষ্ট্রের ২৩ বছর বয়সী পপ তারকা আরিয়ানা গ্রান্ডের গান শুনতে এসেছিলেন তারা।

ইউরোপের সবচেয়ে বড় ইনডোর স্টেডিয়াম ম্যানচেস্টার এরিনা কনসার্ট ভেন্যু হিসেবেও জনপ্রিয়। একসঙ্গে প্রায় ২১ হাজার দর্শকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে।

বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, আরিয়ানা গ্রান্ডে তার পরিবেশনা শেষে মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার পরপরই এরিনার প্রবেশপথের কাছে বিস্ফোরণের ওই ঘটনা ঘটলে আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায়।

যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের আড়াই সপ্তাহ আগে এই ঘটনায় ভোটের প্রচার স্থগিত করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। বিশ্ব নেতারা বিবৃতি দিয়ে এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।