জাপান সম্রাট আকিহিতোর ক্ষমতা ছাড়ার বিল অনুমোদন

জাপানের মন্ত্রিসভা একটি বিল অনুমোদন করেছে, যেটি পাস হলে সিংহাসন ছাড়তে পারবেন সম্রাট আকিহিতো।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2017, 05:42 AM
Updated : 19 May 2017, 05:52 AM

এ বিল অনুমোদনের ফলে জাপানে প্রায় দু’শতাব্দীর ইতিহাসে এই প্রথম কোনও সম্রাটের জীবদ্দশায় সিংহাসন ছাড়ার পট প্রস্তুত হল।

৮৩ বছর বয়সী সম্রাট আকিহিতো গতবছর অগাস্টে বয়স ও রুগ্নস্বাস্থ্যের কারণে ঠিকঠাকমত দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে সিংহাসন ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

কিন্তু জাপানের বিদ্যমান আইনে সম্রাটের সিংহাসন ত্যাগ করা কিংবা ক্রাউন প্রিন্স নারুহিতোকে ক্ষমতা দেওয়ার কোনও বিধান না থাকায় বিষয়টি ঝুলে ছিল।

শুক্রবার এ সংক্রান্ত বিল মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করার পর এখন পার্লামেন্টে এটি পাস হলে আকিহিতো ক্ষমতা ছাড়তে পারবেন।

সম্রাট আকিহিতোর হৃৎপিণ্ডে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তার প্রোস্টেট ক্যানসারও রয়েছে। ১৯৮৯ সালে বাবা সম্রাট হিরোহিতোর মৃত্যুর পর সিংহাসনে আসীন হয়েছিলেন আকিহিতো। জাপানিদের কাছে তিনি খুবই জনপ্রিয় এবং সম্মানিত একজন সম্রাট।

জাপানের গণমাধ্যম জানায়, মন্ত্রিসভা সম্রাট আকিহিতোর সিংহাসন ত্যাগ সংক্রান্ত বিল অনুমোদন করে জানিয়েছে যে, তার ইচ্ছা পূরণের জন্য জনগণের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পাওয়া গেছে।

গণমাধ্যম আরও জানায়, আকিহিতো সিংহাসন ছাড়ার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব নেবেন ক্রাউন প্রিন্স নারুহিতো। তবে একই আইনে তিনি বা তার উত্তরসুরি সিংহাসন ছাড়তে পারবেন না।

সরকার আকিহিতোর সিংহাসন ছাড়ার দিনক্ষণ এখনও ঠিক না করলেও গণমাধ্যমগুলো বলছে, এটি হতে পারে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের দিকে।

১৮১৭ সালে সম্রাট কোকাকুর পর জাপানের আর কোনও সম্রাটই জীবদ্দশায় সিংহাসন ত্যাগ করেননি। এদিক থেকে আকিহিতোই প্রথম দায়িত্ব ছাড়ছেন।

বর্তমানে রাজপরিবারে সিংহাসনের উত্তরাধিকার হতে পারবেন এমন মাত্র চারজন পুরুষ জীবিত রয়েছেন। তাদের দুইজন হলেন, রাজা আকিহিতোর মাঝ বয়সের দুই ছেলে।

 এছাড়া, আছেন আকিহিতোর অশীতিপর ভাই এবং আকিহিতোর ছোট ছেলের ১০ বছর বসয়ী ছেলে প্রিন্স হিসাহিতো।

 জাপানের সংবিধান অনুযায়ী, রাজপরিবারের শুধুমাত্র পুরুষ সদস্যরাই সিংহাসনের উত্তরাধিকার হন। যদিও তরুণ প্রজন্মের একটি অংশ এখন বলছে, রাজদণ্ড শুধুই রাজবংশের পুরুষদের হাতে নয়, নারীদের হাতেও যাওয়া উচিত।

কিন্তু রাজবংশের ক্ষমতার পরম্পরা নারীদের ওপরও বর্তাতে পারে কি না, সে ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি জাপান সরকার।