প্রধান বিচারপতিসহ ৮ সহকর্মীর ‘সাজার আদেশ’ দিলেন ভারতীয় সেই বিচারক

মানসিক সুস্থতা পরীক্ষার জন্য আসা চিকিৎসকদের ফিরিয়ে দিয়ে ভারতের প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের আট বিচারককে পাঁচ বছর করে ‘কারাদণ্ড’ দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2017, 04:28 AM
Updated : 9 May 2017, 04:44 AM

এনডিটিভি জানিয়েছে, জাতপাতের ভিত্তিতে বৈষম্য, ষড়যন্ত্র, হয়রানি ও অবমাননা মামলার অপব্যবহারের দায়ে ‘দোষী সাব্যস্ত করে’ বিচারপতি কারনান সোমবার দেশের শীর্ষ বিচারকদের ওই ‘সাজার আদেশ’ দেন।

অবশ্য বিচারপতি কারনানের বিচারিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা আগেই কেড়ে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে তার এসব নির্দেশের কোনো আইনি বৈধতা থাকছে না বলে মনে করছেন ভারতের আইন বিশেষজ্ঞরা।

গত বুধবার ওই বিচারকদের বিরুদ্ধে জামিনের অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন বিচারপতি কারনান।পরদিন বিচারপতি কারনানের মানসিক সুস্থতা পরীক্ষার জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দল পাঠিয়েছিল ভারতের সর্বোচ্চ আদালত, কিন্তু কারনান তাদের নিজ বাড়ির দরজা থেকেই বিদায় করে দেন।

এ সময় তিনি নিজে ‘মানসিকভাবে সুস্থ’ আছেন বলে দাবি করেন এবং ‘একজন অভিভাবকের উপস্থিতি ছাড়া’ মেডিকেল টিমটি তাকে পরীক্ষা করতে পারবেনা বলে যুক্তি দেখান।   

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের বিচারবিভাগে নজিরবিহীন এই জটিলতার শুরু চলতি বছরের প্রথমদিকে। ওই সময় মাদ্রাজ হাইকোর্টের ৬১ বছর বয়সী বিচারপতি কারনান ভারতের ২০ জন ‘দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারকের’ নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে চিঠি পাঠান।

এ ঘটনার পর তাকে বদলি করে কলকাতা হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেয় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।এতে তিনি অভিযোগ করেন, দলিত শ্রেণির মানুষ হওয়ায় তাকে হয়রানি করা হচ্ছে।  

পরওয়ানা, আদালত অবমাননা এবং মানহানির অভিযোগে দেওয়া সর্বোচ্চ আদালতের সবগুলো আদেশ খারিজ করেছেন বিচারপতি কারনান। সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে পাল্টা আদেশগুলো নিজের বাসায় বসেই জারি করেছেন তিনি। নিজের বাসাকে ‘হোম কোর্ট’ আখ্যায়িত করেছেন।

সর্বোচ্চ আদালত তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনলে সংশ্লিষ্ট বিচারকদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন বিচারপতি কারনান। এরপর কথার লড়াইয়ের মধ্যে ভারতের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহারের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ ১ মে বিচারপতি কারনানের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল।

আগামী এক মাসের মধ্যে বিচারপতি কারনানের অবসরে যাওয়ার কথা। এই দ্বন্দ্বের অবসানের জন্য সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলেই ভারতের আইনবিদদের ধারণা।