‘আপনি কি নারীবাদী?’ উত্তরে যা বললেন তারা

বিশ্বের ক্ষমতাধর সব নারীরা বার্লিনে বসেছেন এক প্যানেল আলোচনায়; ক্ষুদ্রঋণ আর চাইল্ডকেয়ার নিয়ে আলোচনার পর হঠাৎ করেই সরল একটি প্রশ্ন ভাসালেন সঞ্চালক- আপনি কি নিজেকে নারীবাদী মনে করেন?

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2017, 04:44 AM
Updated : 28 April 2017, 05:06 AM

যার উদ্দেশে এই প্রশ্ন, তিনি জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল। তার পাশে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন লাগার্দ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প, কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। অন্যদিকে সঞ্চালকের আরেক পাশে নেদারল্যান্ডসের রানী ম্যাক্সিমা।     

ডব্লিউ টোয়েন্টি সামিটের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার এই প্যানেল আলোচনায় প্রশ্ন শুনে মের্কেলের যে প্রতিক্রিয়া হল, তাতে দর্শকসারিতে শুরু হল হাসির হুল্লোড়, পাশে বসা লাগার্দ হাততালি দিয়ে উৎসাহ দিলেন মের্কেলকে।

এক যুগ ধরে জার্মানির নেতৃত্ব দিয়ে আসা মের্কেল একটুখানি ভাবলেন। তারপর পরিস্থিতি সামলে নিয়ে উত্তর দিলেন কূটনীতির ভাষায়।

“সত্যি বলতে, আমি… আপনারা যদি আমাকে নারীবাদী মনে করেন, তাতে আমার সমস্যা নেই। প্লিজ, আপনারাই সিদ্ধান্ত নিন। তবে আমি নিজেকে এমন পালকে সাজাতে চাই না।”  

মের্কেল বলেন, নারীবাদের যে ইতিহাস, তার সঙ্গে তার নিজের অনেক মিল যেমন আছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে অমিলও আছে। তিনি এমন কোনো তকমা নিজেকে দিতে চান না, যা আসলে তিনি নন।

“যেমন ধরুন অ্যালিস শোয়ার্জার বা তার মত আর যারা আছেন, তারা অনেক কঠিন লড়াই জিতে সফল হয়েছেন এবং বলেছেন- ‘আমি একজন নারীবাদী’। কি দারুণ, তাই না? সুতরাং আপনারা সবাই যদি মনে করেন, আমিও একজন নারীবাদী, তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই। আপনারাই ভোটাভুটি করুন। তবে আমি নিজে থেকে ওই ব্যাজ পরছি না।”   

মাইক নিয়ে রানী ম্যাক্সিমা বলেন, “আমি শুধু চাই, সব নারীর নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ ও স্বাধীনতা থাকবে, যাতে সেই সুযোগ তারা তারা কাজে লাগাতে পারে এবং নিজেদের জন্য গর্ব করতে পারে।

“এটা যদি নারীবাদ হয়, তাহলে আমিও নারীবাদী।”

নেদারল্যান্ডসের রানীর উত্তরের সূত্র ধরে মের্কেলও এ সময় বলে ওঠেন, “তাহলে আমিও নারীবাদী।”

প্যানেল আলোচকদের সামনে সঞ্চালক প্রশ্ন রাখেন, “আপনাদের মধ্যে কেউ কি আছেন, যিনি নিজেকে নারীবাদী মনে করেন?”

দর্শকসারির হাততালির মধ্যে মঞ্চে হাত তোলেন ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড, ইভাঙ্কা ট্রাম্প, ক্রিস্টিন লাগার্দ আর ব্যাংক অব আমেরিকার ভাইস চেয়ারউইম্যান আন ফিনুকেইন।

নিজেকে নারীবাদী দাবি করা ট্রাম্পকন্যা ইভাঙ্কা বলেন, অনেক নারীই ওই অভিধা নিতে চান না, কারণ তারা মনে করেন, সেজন্য যা যা দরকার তার সব বৈশিষ্ট তাদের নেই। 

“আর এটা এত স্পর্শকাতর বিষয় কেন? কারণ আমার মনে হয়, কাউকে ওই অভিধা দেওয়ার মধ্যে কখনও কখনও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিও থাকতে পারে, মনে হতে পারে যে তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে দেওয়া হল।”

[প্রতিবেদনটি তৈরি করতে বিবিসি, রয়টার্স ও আইরিশ টাইমস থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে। ]