হংকংয়ে আরও গণতন্ত্রের দাবি এবং বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের মধ্যে এ অঙ্গীকার করেন তিনি।
১ জুলাইয়ে হংকংয়ের বর্তমান প্রধান নির্বাহী লেয়ুং চুং-ইং এর স্থলাভিষিক্ত হবেন লাম।
নির্বাচিত হওয়ার পর লাম বলেন, “হংকং আমার জন্মভূমি, যেখানে মারাত্মক বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। আমার মূল লক্ষ্য এই বিভেদ মিটিয়ে ফেলা এবং জনগণের মন থেকে হতাশা কমিয়ে আনা। সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমি আমাদের সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই।”
বেইজিংয়ের সমর্থন থাকায় লাম নির্বাচিত হবেন বলে আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল।
তাছাড়া, চীন শাসিত এ বাণিজ্য নগরীটির মানুষের ভোটেও লাম নির্বাচিত হননি। বরং রোববার ১২০০ সদস্যের একটি ‘নির্বাচন কমিটি’ যাদের বেশিরভাগই বেইজিংপন্থি এবং চীন সরকারের অনুগত, সেই কমিটিই লামকে হংকংয়ের পরবর্তী প্রধান নির্বাহী হিসেবে বেছে নিয়েছে।
মোট ৭৭৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়া লাম প্রথম কোনও নারী হিসাবে হংকংয়ের নেতৃত্বে এলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হংকংয়ের সাবেক অর্থমন্ত্রী জন সাং ৩৬৫ ভোট পেয়েছেন। যদিও জনমত জরিপগুলোতে সাং এগিয়ে ছিলেন।
নির্বাচিত হয়ে ক্যারি লাম বিভক্তি দূর করার অঙ্গীকারের পাশাপাশি তরুণদের শক্তিকে জাগিয়ে তোলার কথাও বলেন। তিনি বলেন, “তারাই সমাজের অগ্রভাগে আছে এবং আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তাগাদা দিয়ে যাচ্ছে।”
হংকংয়ে মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং বাকস্বাধীনতার মত মূলনীতিগুলোও সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লাম।
সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকংকে ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন থেকে ‘এক দেশ দুই নীতিতে’ হংকংয়ে চীনের শাসন চলছে।
২০১৪ সালে হংকংয়ের বিশেষ করে ছাত্ররা চীনা কর্তৃত্ব তুলে নিয়ে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করে। প্রায় তিনমাস ধরে চলা ওই আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।
রোববারও গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীরা ভোট কেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভ করে।
বিক্ষোভকারীদের আটকাতে ভোট কেন্দ্রের চারপাশে বিপুল পরিমান পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
লামকে নির্বাচিত করতে চীন ভোটারদের প্রভাবিত করেছে বলেও অভিযোগ তোলেনন বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারী ২০ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী রয়টার্সকে বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার বার বার হস্তক্ষেপ করছে। এটা খুবই অন্যায্য।”
তবে বিক্ষোভকারীদের পাশাপাশি লামের শত শত সমর্থক চীনের পাতাকা হাতে ভোট কেন্দ্রর বাইরে অবস্থান নেয় এবং নেতার বিজয়ের সংবাদ পাওয়ার পর উল্লাস প্রকাশ করে।