লন্ডনে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৮, হামলাকারী ‘জন্মসূত্রে ব্রিটিশ’

লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার সেতু ও পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হামলাকারী একজন ব্রিটিশ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2017, 11:06 AM
Updated : 23 March 2017, 05:33 PM

বুধবারের ওই হামলার তদন্তের আওতায় লন্ডন, বার্মিংহামসহ ছয়টি স্থানে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে সন্দেহভাজনদেরকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন লন্ডন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমিশনার মার্ক রাউলি।

স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের বাইরে এক বিবৃতিতে রাউলি বলেন, “তদন্ত থেকে আমাদের এখনও এটিই মনে হচ্ছে যে, হামলাকারী একাই হামলা চালিয়েছে এবং সে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ থেকেই একাজ করতে করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছে।”

“তবে এ মুহূর্তে এ ধরনের আর কোনও হামলার হুমকির সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই।”

হামলাকারী জন্মসূত্রে ব্রিটিশ

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে হাউস অব কমন্সে বলেছেন, হামলাকারী একজন ব্রিটিশ এবং  নিরাপত্তা সংস্থা এমআইফাইভ কয়েকবছর আগে তার বিরুদ্ধে তদন্তও চালিয়েছিল। তবে সে সাম্প্রতিক গোয়েন্দা তদন্তের আওতায় ছিল না।

তিনি বলেন, হামলাকারী একাই হামলা চালিয়েছে এবং সে ইসলামিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তার হামলার পরিকল্পনা কিংবা উদ্দেশ্য সম্পর্কে আগাম কোনও গোয়েন্দা তথ্য ছিল না। তবে পুলিশ হামলাকারীর পরিচয় জানে এবং সঠিক সময়ে তা প্রকাশ করা হবে।

সদ্য ঘটে যাওয়া এ হামলার পর এখন আর সে ধরনের হামলার হুমকির কোনও কারণ নেই বলেও আশ্বস্ত করেছেন মে।

আহতদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের মানুষ

বুধবার  লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার সেতুতে পথচারীদের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে ছুরি নিয়ে হামলার ঘটনায় চারজন নিহত ও প্রায় ৪০ জন আহত হয়। আহতদের ৭ জনের অবস্থা গুরুতর। বাকী আরও ২৯ জনকে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আহতরা বিভিন্ন দেশের মানুষ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মে। তাদের ১২ জন ব্রিটিশ, তিনজন ফরাসি শিশু, দুজন রুমানিয়ান, চারজন দক্ষিণ কোরীয়, দুজন গ্রিক, একজন জার্মানির, একজন পোল্যান্ডের, একজন আয়ারল্যান্ডের, একজন চীনের, একজন ইতালির এবং একজন যুক্তরাষ্ট্রের। তিন পুলিশ কর্মকর্তাও ঘটনায় আহত হয়েছে। তাদের দুইজনের অবস্থা গুরুতর।

যেভাবে হামলা

বিবিসি জানিয়েছে, ওয়েস্টমিনস্টার সেতুতে স্থানীয় সময় বেলা ২টা ৪০ এ পথচারীদের ওপর গাড়ি তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে হামলার শুরু। সেখানে গাড়ি চাপায় তিনজন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়।

এরপর ওই গাড়ি পথচারীদের ধাক্কা দিয়ে পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণের রেলিংয়ে ধাক্কা খায়। সেখানে ধূসর রঙের হুন্দাই গাড়িটি থেকে ছুরি হাতে এক লোক বেরিয়ে আসে এবং দৌঁড়ে পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে ঢোকার সময় এক পুলিশের সামনে পড়ে।

নিরস্ত্র ওই পুলিশ কর্মকর্তা বাধা দিলে তাকে ছুরি মারে হামলাকারী। এতে ওই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। এরপর সাধারণ পোশাকে থাকা পুলিশ সদস্যদের গুলিতে নিহত হয় হামলাকারী।

পুলিশ হামলাকারীর নাম প্রকাশ করেনি। তল্লাশি অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত নাম প্রকাশ করতে সাংবাদিকদের নিষেধ করেছেন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার রাউলিং।

ইসলামি জঙ্গিবাদের সঙ্গে এ হামলার সম্পর্ক আছে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফেলোন বলেছেন, “আমরা এমন এক শত্রু এমন এক সন্ত্রাসীকে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছি যে কোনও দাবি করছে না বা কাউকে জিম্মিও করছে না। কেবল যত সম্ভব মানুষ মারতে চাইছে। এটি নতুন ধরনের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ।”