সেব্রেনিতসা হত্যাযজ্ঞের জন্য নেদারল্যান্ডস দায়ী: এরদোয়ান

নেদারল্যান্ডের সঙ্গে তুরস্কের বাকযুদ্ধ আরো নাজুক হয়ে উঠছে, এবার সেব্রেনিতসা গণহত্যার জন্য ডাচদের দায়ী করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2017, 06:39 AM
Updated : 15 March 2017, 06:41 AM

১৯৯৫ সালে বোসনিয়ার সেব্রেনিতসায় আট হাজার মুসলিম তরুণ-তরুণী ও বয়স্কদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। বোসনীয় সার্ব বাহিনীগুলো এই হত্যাযজ্ঞের জন্য দায়ী হলেও ঘটনার সময় ওই এলাকায় মোতায়েন জাতিসংঘের ডাচ শান্তিরক্ষীরা তাদের বাধা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল।

বিবিসি জানিয়েছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান বলেছেন, ওই ব্যর্থতাই দেখিয়েছে ডাচদের ‘নৈতিকতা ভেঙে পড়েছে’।

তিনি বলেন, “সেব্রেনিতসা হত্যাযজ্ঞ থেকেই নেদারল্যান্ড ও ডাচ লোকজনের পরিচয় পেয়েছি আমরা। সেখানে তারা যে আট হাজার বসনীয়কে হত্যা করেছে, তার থেকেই আমরা জানি তাদের চরিত্র কতোটা পচে গেছে।”

ওই হত্যাযজ্ঞের জন্য জাতিসংঘের ট্রাইবুনালে বোসনীয় সার্বদের বিচার চলছে, কিন্তু ঘটনাটি নেদারল্যান্ডসের জন্য কাঁচা ক্ষতের মতো হয়ে আছে; এবার সেই ক্ষতেই খোঁচা দিয়েছেন এরদোয়ান।

এতে বোঝা যাচ্ছে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে শুরু হওয়া বাকযুদ্ধে এত সহজে ক্ষান্ত দিবেন না তিনি।

এরদোয়ানের এসব মন্তব্যকে ‘জঘন্য মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছেন নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুচা। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, “প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় এরদোয়ান ক্রমাগত হিস্টিরিয়া-গ্রস্ত হয়ে পড়ছেন এবং আমি চাই তিনি শান্তি হোন।”   

এরদোয়ানের ক্ষমতা আরও বাড়াতে ১৬ এপ্রিল সংবিধান সংশোধন নিয়ে তুরস্কে গণভোট হওয়ার কথা রয়েছে। এই গণভোটের প্রচারে নেদারল্যান্ডস-এ তুর্কি মন্ত্রীদেরকে সমাবেশ করতে না দেওয়ার জেরে দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। 

গত শনিবার নেদারল্যান্ডসের রটেরডাম শহরে তুরস্কের দুই মন্ত্রীকে প্রচার সমাবেশ করতে দেয়নি পুলিশ, এ থেকেই ঘটনার শুরু। পরে তুরস্কের এক মন্ত্রীকে কনস্যুলেটে ঢুকতে না দেওয়া এবং তাকে জার্মান সীমান্ত দিয়ে বের করে দেওয়া হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।

এর জেরে নেদারল্যান্ডসের কড়া সমালোচনা করাসহ একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে তুরস্ক।

ডাচ রাষ্ট্রদূতকে আঙ্কারায় নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে উচ্চ-পর্যায়ের রাজনৈতিক আলোচনা বন্ধ করা এমনকি দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্বেরও ইতি টানা হবে জানিয়েছেন তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রী। নেদারল্যান্ডস তাদের অবস্থান না বদলানো পর্যন্ত এ সমস্ত পদক্ষেপ কার্যকর থাকবে বলে জানান তিনি।

এর আগে এরদোয়ান ডাচদেরকে নাৎসির অবশিষ্টাংশ এবং ফ্যাসিস্ট এবং নেদারল্যান্ডসকে ‘বানানা রিপাবলিক’ বলেও অভিহিত করেছেন। 

নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে বিরোধে সংযত থাকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ কর্মকর্তাদের আহ্বানও প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ।

নেদারল্যান্ডসে প্রায় চার লাখ তুর্কি বসবাস করে। ইইউ এর ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ নেদারল্যান্ডস তুরস্কে বিদেশি বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় উৎস।