গুয়েতেমালায় আশ্রয়কেন্দ্রে আগুন: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫

গুয়েতেমালায় নির্যাতিত শিশু ও কিশোরীদের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৩৫ হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই মেয়ে শিশু।

>>রয়টার্স
Published : 10 March 2017, 06:08 AM
Updated : 10 March 2017, 06:36 AM

আরও অন্তত ২৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন মারাত্মকভাবে দগ্ধ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সান হুয়ান দে ডিওস হাসপাতালের পরিচালক হুয়ান অ্যান্টনিও ভিলেদা বলেন, “গত ২৯ বছর ধরে আমি দগ্ধ রোগীদের নিয়ে কাজ করছি। কিন্তু গতকাল আমি যা দেখলাম, ওটাকে আমার দান্তের কবিতায় বর্ণনা করা নরকের কষ্ট মনে হয়েছে।”

রাজধানী গুয়েতেমালা সিটি থেকে ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের সান হোসে পিনুলা এলাকায় সরকার পরিচালিত ভিরহেন দ্য আসুনসিয়ন নামের আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানীয় সময় বুধবার ভোররাতে আগুন লাগে।

পুলিশ জানিয়েছে, জনাকীর্ণ ওই আশ্রয় কেন্দ্রটির কিছু বাসিন্দা রাতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে কয়েকটি তোশকে আগুন ধরিয়ে দিয়ে থাকতে পারে।

প্রাথমিকভাবে অন্তত ২২ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হওয়ার কথা বলা হয়েছিল।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে আর আট জনের মৃত্যুর খবর জানান চিকিৎসকরা।

আহত আরও ১৫ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের ফুসফুস, শ্বাসনালী এবং চামড়া মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে বলে জানান রোজইভেল্ট হাসপাতালের পরিচালক কার্লোস সোতো।

তিনি বলেন, “আমার ১৩ বছরের পেশাজীবনে আমি কখনও এতো মারাত্মক দগ্ধ রোগী দেখিনি। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।”

ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে গুয়েতেমালায় শিশু নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি।

ভিরহেন দ্য আসুনসিয়ন আশ্রয় কেন্দ্রের নিম্নমান নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রটির ধারণক্ষমতা ৪০০ জন হলেও এতে ৫০০ জনকে রাখা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরেই এ সমস্যা চলছিল।

অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত ক্ষুব্ধ লোকজন জানিয়েছে, কেন্দ্রটিতে নির্যাতন একটি নিয়মিত ঘটনা ছিল।

এ ঘটনায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন গুয়াতেমালার প্রেসিডেন্ট জিমি মোরালেস।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের দেশে এ ধরণের দুর্ঘটনার ইতি টানা প্রয়োজন।

“নিশ্চিতভাবেই আমাদের সামগ্রিক ব্যবস্থায় পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং বিস্তৃত সংস্কার করতে হবে।”

তিনি আপাতত ভিরহেন দ্য আসুনসিয়ন আশ্রয় কেন্দ্রটি বন্ধ ঘোষণা করে সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথাও জানান।