উত্তর কোরিয়ার ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল: মালয়েশিয়া

কিম জং-ন্যাম হত্যার ঘটনায় মালয়েশিয়াকে দোষারোপ করার জন্য উত্তর কোরিয়ার ‘ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল’ বলে মন্তব্য করেছেন মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক।

>>রয়টার্স
Published : 6 March 2017, 01:48 PM
Updated : 6 March 2017, 01:48 PM

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত কাঙ চোলকে ‘রূঢ়’ আখ্যা দিয়ে শনিবার তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মালয়েশিয়া ত্যাগের নির্দেশ দেন রাজাক।  সেইসঙ্গে  পিয়ংইয়ং থেকে ডেকে পাঠান মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূতকেও।

খুনের ঘটনায় মালয়েশিয়া জড়িত বলে উত্তর কোরিয়া যে বিবৃতি দিয়েছিল তা প্রত্যাহার না করাতেই কাঙ চোলকে বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাজাক।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ‍কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সৎভাই কিম জং-ন্যামকে রাসায়নিক অস্ত্র ভিএস নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ধারণা ‍উত্তর কোরিয়ার চররাই এ কাজ করেছে।

কিন্তু উত্তর কোরিয়া এটি অস্বীকার করে উল্টো মালয়েশিয়াকেই খুনের ঘটনায় জড়িত বলে দোষারোপ করে।

মালয়েশিয়ার নিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত কাঙ চোল অভিযোগ করে বলেন, “নাজিব সরকার ‘বিদেশি শক্তির সঙ্গে আঁতাত করছে। তাদের তদন্ত বিশ্বাসযোগ্য নয়।”

এর পরিপ্রেক্ষিতে চোলকে ‘কূটনৈতিকভাবে রূঢ়’ বলে তাকে মালয়েশিয়ায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন নাজিব রাজাক।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূত চোলকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পরও উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে কোনও সরকারি বিবৃতি আসেনি।

ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা কোনও সাড়া পাচ্ছি না। আর কোনো ক্ষমাও আশা করি না।”

তবে তিনি এও বলেন, “তারা (উত্তর কোরিয়া) যদি হুট করে কোনও অভিযোগ করে আর সেটি বস্তুনিষ্ঠ না হয়, তাহলে তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং বিবৃতি প্রত্যাহার করা উচিত।”

“তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। সুতরাং, আমরা আমাদের নীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার পদক্ষেপ নিয়েছি।”

রাজাক বলেন,“কারোরই আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা বা খেয়াল-খুশি মত আমাদের ক্ষতি করার অধিকার নেই।”

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার ভেবে দেখার আগে দেশটি আগামীতে কি পদক্ষেপ নিচ্ছে তা দেখার জন্য মালয়েশিয়া অপেক্ষা করে থাকবে বলে জানিয়েছেন নাজিব রাজাক।

বিশ্বের সঙ্গে প্রায় বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ার যে অল্প কয়েকটি দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে মালয়েশিয়া তার একটি। কিন্তু ন্যাম হত্যাকাণ্ডে মালয়েশিয়ার ভূমি ব্যবহার এবং তাদের তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে।

যদিও উত্তর কোরিয়া এখনও নিহত ব্যক্তি ন্যাম বলে স্বীকার করেনি। বরং তারা বলেছে, উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর ‘অনুমতি না নিয়ে ময়নাতদন্ত করে’ মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।

দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার প্রশ্নে রাজাক বলেন, “ভবিষ্যতে কি হয় দেখা যাবে। যথা সময়ে এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নেব।”

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় মালয়েশিয়া ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে উত্তর কোরীয় রাষ্ট্রদূত কাঙের।

১৯৭০ সাল থেকে উত্তর কোরিয়া ও মালয়েশিয়ার মধ্যে মিত্রতার সম্পর্ক বিরাজমান। গত সপ্তাহ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা ভিসা ছাড়াই মালয়েশিয়া প্রবেশ করতে পারতেন। কিন্তু এ সপ্তাহ থেকে ওই ব্যবস্থা স্থগিত করা হয়েছে।