কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর নিরাপদ: মালয়েশিয়া

কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে কোনো ধরনের প্রাণঘাতী রাসায়নিকের উপস্থিতি আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখার পর বিমানবন্দরটিকে ‘নিরাপদ এলাকা’ ঘোষণা করছে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ।

>>রয়টার্স
Published : 26 Feb 2017, 06:34 AM
Updated : 26 Feb 2017, 06:34 AM

১৩ ফেব্রুয়ারি এই বিমানবন্দরে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের সৎভাই কিম জং ন্যামকে প্রাণঘাতী রাসায়নিক ভিএক্স নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়। জাতিসংঘ এই রাসায়নিকটিকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

শনিবার দিবাগত রাত ১টায় (রোববার) মালয়েশীয় পুলিশের ফরেনসিক টিম, দমকল বিভাগ এবং অ্যাটোমিক এনার্জি লাইসেন্সিং বোর্ড কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (কেএলআইএটু) বাজেট টার্মিনাল এলাকাটি নিবিড়ভাবে পরীক্ষা ও পরিষ্কার করে।   

এরপর বিমানবন্দরেই এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্তকারী দলপ্রধান সেলানগর রাজ্য পুলিশ প্রধান আব্দুল সামাত ম্যাট বলেন, “আমরা নিশ্চিত করছি, নম্বর এক, কেএলআইএটুতে কোনো বিপজ্জনক উপাদান নেই; নম্বর দুই, কেএলআইএটু বিপজ্জনক উপাদানের দূষণ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত এবং তৃতীয়ত, কেএলআইএটু নিরাপদ এলাকা ঘোষিত হয়েছে।”

বাজেট টার্মিনালের যে এলাকায় ন্যামের ওপর হামলা চালানো হয়েছিল, পরীক্ষা ও পরিষ্কার করার সময় ওই এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছিল। টার্মিনালের বাকি অংশগুলো ব্যবহারের জন্য খোলাই ছিল।

প্রায় দুই সপ্তাহ আগের ওই ঘটনার পর টার্মিনালটি দিয়ে লাখ লাখ মানুষ পার হয়েছে, এই পুরোটা সময়ই হামলাস্থলটি দিয়ে মানুষ চলাচল করেছে।

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুব্রাম্মানিয়াম সত্যশিভাম জানিয়েছেন, পুলিশের প্রতিবেদনের বলা হয়েছে, ন্যামকে ভিএক্স এজেন্ট ব্যবহার করে মারা হয়েছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও বিষয়টিকে সমর্থন করেছে।   

তিনি বলেন, “এই রাসায়নিক গুরুতর পক্ষাঘাতের কারণ হয়, যার কারণে অল্প সময়ের মধ্যে মানুষটি মারা যায়।”

বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দুই নারীকে ন্যামকে হেনেস্থা করতে দেখা যায়। কর্তৃপক্ষের ধারণা, তারা ভিএক্স এজেন্ট মাখা কাপড় ন্যামের মুখে চেপে ধরেছিলেন। 

পরবর্তী ফুটেজগুলোতে দেখা যায়, ন্যাম বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে সাহায্য চাইছেন, নিজের চোখ কচলাচ্ছেন এবং বিমানবন্দরের ক্লিনিকে ঢোকার পর হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাচ্ছেন।

মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ঘটনার পর থেকে বিমানবন্দরের ক্লিনিকটিতে ব্যতিক্রম কোনো কিছু ঘটেনি, ক্লিনিকের চিকিৎসা কর্মীদের শরীরও ভাল আছে।

কিন্তু বিমানবন্দরে ন্যামকে হেনেস্থার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যে দুই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন, ইন্দোনেশীয় নাগরিক সিতি আইশাহ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। প্রাণঘাতী ওই রাসায়নিকটির সংস্পর্শের কারণেই সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সিতি ওই রাসায়নিকটির প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুব্রাম্মানিয়াম।