তখন হলে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হত মেলানিয়াকেও

ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ১৯৯০ এর পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতেন এবং এখনকার মতো অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিতেন, তাহলে মেলানিয়া ট্রাম্পকেও আর যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হত না।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2017, 07:29 AM
Updated : 25 Feb 2017, 07:30 AM

ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নিদের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

১৯৯৬ সালে মেলানিয়া যুক্তরাষ্ট্রে মডেলিং করে ২০ হাজার ডলারের উপরে কামিয়েছিলেন, অথচ তখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন ট্যুরিস্ট ভিসায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিমালা অনুযায়ী ভ্রমণ ভিসায় দেশটিতে গিয়ে আয় করার নিয়ম নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি বৈধভাবে কাজ করার অনুমতি বা ‘ওয়ার্ক পারমিট’ পান।

মডেলিংয়ে অতগুলো টাকা কামানোর প্রায় সাত সপ্তাহ পরে মেলানিয়া ‘ওয়ার্ক পারমিট’ পেয়েছিলেন বলে ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এরও পাঁচবছরপর তিনি ‘গ্রিন কার্ডের’ জন্য আবেদন করেছিলেন। ২০০৬ সালে মেলানিয়া তখনকার নীতি অনুযায়ী, আগের ‘অন্যায়ের’ কথা না জানিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পান।

এখনকার সময়ে যা তার জন্য ‘প্রায় অসম্ভব’ ছিল।

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী দেশটির ইমিগ্রেশন অফিসাররা এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেসব অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে, যারা ‘সরকারি দপ্তরে আবেদনের আগে প্রতারণায় যুক্ত ছিলেন কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো বিষয়ে কর্মকর্তাদের ভুল তথ্য দিয়েছেন’।

তখনকার মডেল মেলানিয়া এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্টলেডি

স্লেট ম্যাগাজিনের ব্লগসাইটে দুই ইমিগ্রেশন অফিসারের বরাত দিয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানাচ্ছে, মেলানিয়া ১৯৯৬ সালে যা করেছিলেন এবং পরে তার উল্লেখ না করেই যে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী হওয়ার আবেদন করেছিলেন, তা এখনকার নিয়ম অনুযায়ী হত ‘ভয়াবহ অপরাধ’।

“ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ আর হোমল্যান্ড সিকিউরিটির নতুন নির্দেশনা যদি সে সময়ে কার্যকর থাকত, তাহলে তিনিও (মেলানিয়া) ফেরত পাঠানোর অগ্রাধিকার তালিকায় থাকতেন,” বলেন লিগ্যাল এইড সার্ভিসের ইমিগ্রেশন ল ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি হাসান শফিকুল্লাহ। 

এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন নিউ ইয়র্কের ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞ শেরিল ডেভিড।

তিনি বলেন, মেলানিয়া ট্রাম্প যদি সে সময়ে ভ্রমণ ভিসায় এসে কোনো কাজ এবং তা থেকে আয় করেন তাহলে অবশ্যই তা ছিল তার অভিবাসন মর্যাদার ‘খেলাপ’। 

“এটা যদি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের নজরে আসত তাহলে অবশ্যই তারা তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করত।”

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, মেলানিয়ার স্থায়ী বসবাসের সুযোগ এখনও হুমকির মুখে পড়বে যদি প্রমাণিত হয় তিনি নাগরিকত্বের আবেদন করার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন, বা কোনো তথ্য গোপন করেছিলেন।

সন্ত্রাসী এবং যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আছে তারা বাদে অন্যদের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা সাধারণত এ ধরনের ছোটখাট ভুলকে আমলে নিতেন না।  

বারাক ওবামা এবং যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রেসিডেন্টরাও অভিবাসনের ক্ষেত্রে এ ধরণের শিথিলতাকে অনুমোদন দিয়ে আসছিলেন।

কিন্তু সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগকে (ডিএইচএস) নির্দেশ দিয়েছেন, তারা যেন অভিবাসী আইন ভঙ্গকারী সবাইকে চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করে। 

চলতি সপ্তাহে ডিএইচএস জানিয়েছে, তাদের কর্মকর্তারা নতুন নির্দেশের ব্যবহার শুরু করেছেন।