বিবিসি জানিয়েছে, রোববার বিমান হামলা ও কামানের গোলার ছত্রছায়ায় শত শত ইরাকি সামরিক যান মরুভূমির মধ্য দিয়ে পশ্চিম মসুলের জঙ্গি অবস্থানগুলোর দিকে এগিয়ে যায়।
তারা পশ্চিম মসুল ঘিরে ফেলতে শুরু করেছে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোট বাহিনীর বিমানগুলো আইএসের লক্ষ্যস্থলগুলোতে বিমান হামলা শুরু করেছে।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি আনুষ্ঠানিকভাবে এই অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেছেন, “অভিযানের নতুন পর্ব শুরু করার ঘোষণা দিচ্ছি আমি, মসুলের পশ্চিম অংশ মুক্ত করতে নিনেভে আসছি আমরা।
“দায়েশের (আইএস) সন্ত্রাস থেকে নাগরিকদের মুক্ত করতে শুরু করেছে আমাদের বাহিনীগুলো।”
এর আগে সরকারি বাহিনীর আসন্ন অভিযানের বিষয়ে পশ্চিম মসুলের বেসামরিক বাসিন্দাদের সতর্ক করতে বিমান থেকে হাজার হাজার লিফলেট ছাড়া হয়। শহরটির এই অংশে ছয় লাখ ৫০ হাজার বাসিন্দা রয়েছে বলে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে। দুপক্ষের লড়াইয়ের মাঝে শহরে আটকা পড়তে যাওয়া বেসামরিকদের কথা ভেবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
ইরাকে আইএসের শেষ শক্ত ঘাঁটি ছিল মসুল। মাঝ বরাবার বয়ে যাওয়া তাইগ্রিস নদী শহরটিকে পূর্ব ও পশ্চিম অংশে বিভক্ত করে রেখেছে। সরকারি বাহিনীগুলো গত মাসে পূর্ব মসুল পুনরুদ্ধার করেছে।
সরকারি বাহিনীর অভিযানের মুখে টিকতে না পেরে আইএসের জঙ্গিরা পশ্চিম মসুলে যেয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে আগে থেকেই জঙ্গিগেোষ্ঠীটির শক্ত অবস্থান ছিল, পূর্ব পাশের জঙ্গিরা যোগ দেওয়ায় তাদের শক্তি আরও সংহত হয়েছে। তাই পশ্চিম মসুল মুক্ত করতে ইরাকি বাহিনীগুলোকে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পশ্চিম মসুলের প্যাচানো সরু গলিগুলোও এক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা হয়ে দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন সমর বিশেষজ্ঞরা।
পূর্বাংশ থেকে পশ্চিম মসুল কিছুটা ছোট হলেও এখানে লোকসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। এই অংশের বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা আইএসপন্থি। অভিযানরত বাহিনীগুলোকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
দুই বছরেরও বেশি সময় আগে সিরিয়া ও ইরাকে বিশাল অংশ দখল করে নেওয়ার সময় মসুলও দখল করে নেয় আইএস জঙ্গিরা। এই শহর থেকেই গোষ্ঠীটির প্রধান আবু বকর আল বাগদাদি তথাকথিত ইসলামিক স্টেট ‘রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিলেন।