তামিলনাডুর বিধানসভায় হট্টগোল, ভাংচুর, অধিবেশন স্থগিত

প্রধান বিরোধী দল ডিএমকের বিধায়কদের তামিলনাডুর বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্পিকার পি ধানাপাল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2017, 10:58 AM
Updated : 18 Feb 2017, 10:58 AM

কিন্তু শনিবার তারা স্পিকারের এ নির্দেশ অমান্য করে বিধানসভায় রয়ে যান, চেয়ার-টেবিল, মাইক ভাংচুর করেন, পেপার ছুঁড়ে মেরে মুখ্যমন্ত্রী ই পালানিস্বামীর আস্থা ভোটের প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেন, জানিয়েছে এনডিটিভি।

আস্থা ভোট গোপনে নেওয়ার দাবিতে তারা হট্টগোল শুরু করেন। এক পর্যায়ে স্পিকারকে ঘিরে ধরে চিৎকার শুরু করেন, এমনকি এক বিধায়ক স্পিকারের চেয়ারে বসে পড়েন।

এই পর্যায়ে স্পিকার আস্থা ভোট গ্রহণ স্থগিত করে অধিবেশন মূলতবি করতে বাধ্য হন।

বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া পালানিস্বামীর প্রতি দলের বিধায়কদের সমর্থন প্রমাণ করার কথা ছিল এ দিন। সকালে আস্থা ভোটের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

আস্থা প্রমাণের জন্য রাজ্য বিধানসভার ২৩৪ জন সদস্যের মধ্যে অন্তত ১১৭ জনের সমর্থন লাগবে পালানিস্বামীর। তার প্রতি ১২৩ জন বিধায়কের সমর্থন আছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। কিন্তু অধিবেশন শুরু হওয়ার পর ক্ষমতাসীন এআইএডিএমকে দলের এক বিধায়ক পালানিস্বামীর প্রতি নিজের সমর্থন প্রত্যাহার করেন।

এরপর তার প্রতি সমর্থন জানানো বিধায়কের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২২ জনে। এর মধ্যে মাত্র ছয়জন তার বিরুদ্ধে ভোট দিলেই তিনি হেরে যাবেন।

এ অবস্থায় বিরোধীদল ডিএমকে এবং কংগ্রেস জানায় তারা এআইএডিএমকের পদত্যাগকারী মুখ্যমন্ত্রী ও পনিরসেলভামের পক্ষে ভোটে দিবে। ১২ দিন আগে দলের নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন পনিরসেলভাম। এআইএডিএমকের ১১ জন বিধায়কও তাকে সমর্থন করবেন বলে জানান।

ডিএমকের ৮৮ জন বিধায়ক, কংগ্রেসের ৮ বিধায়ক, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম অব লিগের একজন এবং এআইএডিএমকের ১১ জন বিধায়ককে নিয়ে পনিরসেলভামের পক্ষে বিধায়কের সংখ্যা দাঁড়ায় ১০৯ জন।

এ পরিস্থিতিতে আস্থা ভোট গোপনে গ্রহণ করার জন্য স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানায় ডিএমকে ও পনিরসেলভাম। কিন্তু তাদের প্রস্তাব স্পিকারের অনুমোদন পায়নি, ভোট গ্রহণে বিলম্ব করার ডিএমকের প্রস্তাবও স্পিকার প্রত্যাখ্যান করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তারা।

এআইএডিএমকে প্রধান ভিকে শশিকলার তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুর্নীতির দায়ে তার চার বছরের কারাদণ্ড হওয়ায় তিনি আর মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না। তাই নিজের অনুগত ৬৩ বছর বয়সী পালানিস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী পদে মনোনীত করে যান তিনি। 

জানা গেছে, বিধানসভায় এআইএডিএমকের কিছু বিধায়ক অভিযোগ করেছেন, পক্ষত্যাগ যেন না করতে পারেন সেজন্য তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গত সপ্তাহ থেকে একটি অবকাশ কেন্দ্রে তাদের পৃথক করে রেখেছিলেন শশিকলা। 

পনিরসেলভামও বলে আসছেন জোর করে তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ বিধায়ককে শশিকলা চেন্নাইয়ের কাছে একটি অবকাশ কেন্দ্রে ‘আটক’ করে রেখেছেন বলে অভিযোগও করেন তিনি। নিজের মুখ্যমন্ত্রীত্ব ধরে রাখার চেষ্টা করেও প্রয়োজনীয় সমর্থন দেখাতে না পারায় তিনি ব্যর্থ হন।

দলের এক নির্দেশনায় এআইএডিএমকে দলীয় সব বিধায়ককে পালানিস্বামীকে ভোট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশের কারণে পনিরসেলভামকে সমর্থনকারী এআইএডিএমকের বিধায়করা প্যাচে পড়ে গেছেন। দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিলে আইনানুযায়ী তাদের সদস্য পদ খারিজ হয়ে যাবে।

স্পিকার শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেছেন বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।