ট্রাম্পে বিরক্ত আরও ১০ উপদেষ্টার পদত্যাগ

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিতে অসন্তুষ্ট হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এশিয়ান-আমেরিকান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের আরও ১০ সদস্য পদত্যাগ করেছেন।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2017, 07:19 AM
Updated : 18 Feb 2017, 07:20 AM

বারাক ওবামার আমলে নিয়োগ পাওয়া এ উপদেষ্টারা বৃহস্পতিবার এক চিঠিতে নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাদের পদ ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। 

পদত্যাগকারীদের মধ্যে পরিষদের চেয়ার টাং টি নিগুয়েন ও ভাইস চেয়ার মেরি ওকাদা ছাড়াও আছেন মাইকেল বিউন, ক্যাথি কো চিন, জ্যাকব ফিটিজিমানো, ডেফনি কোয়াক, ডি জে মেইলার, মলিক পাঞ্চলি, লিন্ডা ফেন, সনজিতা প্রধান।

পদত্যাগের কারণ হিসেবে তারা গত মাসের শেষদিকে অভিবাসন ও শরণার্থীদের নিয়ে ট্রাম্পের দেওয়া নির্বাহী আদেশ এবং ওবামার আমলে নেওয়া স্বাস্থ্যসেবা বাতিলকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

জানুয়ারির ১৩ তারিখে নতুন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পরিষদের সদস্যরা বসতে চেয়ে চিঠি দিলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি বলেও পদত্যাগপত্রে জানানো হয়।

স্বাস্থ্যসেবা ও অভিবাসী নিয়ে ট্রাম্পের দুই আদেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এশিয়ান-আমেরিকান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ বিষয়ক পররাষ্ট্র নীতির লঙ্ঘন বলেও দাবি করেন তারা।

এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এ বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের ২০ সদস্যের ১৬ জনই দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন।

বারাক ওবামার এশিয়ান-আমেরিকান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ, যার ১৬ জনই পদত্যাগ করেছেন। ছবি-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

পরিষদের সদস্য বাংলাদেশি-আমেরিকান ড. নীনা আহমেদসহ ৬ জন এর আগে ট্রাম্পের শপথের দিন ২০ জানুয়ারি পদত্যাগ করেছিলেন। বাকি চারজনের মেয়াদ থাকছে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর‌্যন্ত।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের আমলে ১৯৯৯ সালে প্রথম এ এশিয়ান-আমেরিকান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়।

এর পরের প্রেসিডেন্টরা দায়িত্ব নিয়ে তাদের পছন্দের উপদেষ্টাদের দিয়ে পরিষদটি পুনর্গঠন করেন। বারাক ওবামা তার দ্বিতীয় মেয়াদে নীনা আহমেদকে উপদেষ্টা মনোনীত করেছিলেন। নীনাই ছিলেন ওবামা প্রশাসনে সর্বোচ্চ পদমর্যাদার বাংলাদেশি-আমেরিকান।

‘খানিক বিলম্বে’ সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ১০ পদত্যাগকারীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ফিলাডেলফিয়া সিটির ডেপুটি মেয়র নীনা। উপদেষ্টা পরিষদে থাকার সময়ই তিনি এ পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।  

নীনা শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পরপরই তিনি প্রেসিডেন্টের এশিয়ান-আমেরিকান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন। 

“নির্বাচনী প্রচার সমাবেশ ও টিভি বিতর্কে ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী ও মুসলিমবিদ্বেষী বক্তব্য আমাকে হতবাক করেছিল। তার প্রতিটি বক্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নীতি, আদর্শ ও মূল্যবোধের পরিপন্থি। এ জন্য নতুন প্রেসিডেন্টের শপথের দিনই আমিসহ ৬ জন পদত্যাগ করি।”

সর্বশেষ পদত্যাগকারী ১০ জনও ট্রাম্পের গণবিরোধী অভিবাসন নীতিতে ‘অতিষ্ঠ’ হয়ে পদ ছেড়েছেন বলে মন্তব্য করেন নীনা।