দেশটির ইংরেজি দৈনিক ইজিপশিয়ান স্ট্রিটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৫ ফেব্রুয়ারির ওই রায়ে আদালত দেশটির ‘সিভিল সার্ভেন্ট ল’ এর বেশ কয়েকটি ধারাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে।
ওই ধারাগুলোতে মিশরের মুসলমান নাগরিকদের মক্কায় হজে যেতে একমাসের সবেতন ছুটি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু খ্রিস্টানদের জন্য তেমন কোনো সুযোগ সেখানে রাখা হয়নি।
এই রায়ের ফলে দেশটির সংখ্যালঘু কপটিক খ্রিস্টানরা ইসরায়েল অধিকৃত জেরুজালেমে তীর্থে গেলে বেতনসহ একমাসের ছুটি নিতে পারবেন।
কপটিক অধিকার গ্রুপগুলো আদালতের এই রায়কে তাদের পূর্ণাঙ্গ নাগরিক অধিকার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে একধাপ অগ্রগতি হিসেবে দেখছে। তারা বলছেন, মিশরের ২০১৪ সালের সংবিধান অনুযায়ী ‘সকল নাগরিকের জন্য সমান অধিকার’ নিশ্চিত করার পথ তৈরি হল এই রায়ে।
আদালত অধিকার দিলেও মিশরের কপটিক খ্রিস্টানদের তীর্থ করতে জেরুজালেমে যাওয়ার হার কতটা বাড়বে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ইজিপশিয়ান স্ট্রিট।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে কপটিক অর্থোডক্স চার্চ ১৯৮০ সালে অনুসারীদের জেরুজালেমে তীর্থযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়। অবশ্য রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ নেই এমন একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা যৌক্তিক কি না- সে প্রশ্ন ওঠে তখন থেকেই।
কপটিক অর্থোডক্স চার্চ সে সময় কেবল নিষেধাজ্ঞা দিয়েই থেমে থাকেনি; কেউ জেরুজালেমে তীর্থে গেলে জরিমানা করারও বিধান দেয়।
কপটিক চার্চের সর্বোচ্চ নেতা পোপ দ্বিতীয় তাওয়াদ্রুজ ২০১৫ সালের নভেম্বরে আর্চ বিশপ আনবা আব্রাহামের শেষকৃত্যে যোগ দিতে জেরুজালেমে গেলে বিষয়টি বিতর্কের জন্ম দেয়।
১৯৬৭ সালে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব শুরুর পর সেটাই ছিল জেরুজালেমে কপটিক চার্চের কোনো প্রধানের প্রথম সফর।
এ নিয়ে বিতর্কের মধ্যে কপটিক চার্চ সে সময় জানায়, আর্চ বিশপের আত্মার প্রতি সমবেদনা জানাতেই পোপ ওই সফরে যান। এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না।
মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায় খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে সেইন্ট মার্কের প্রতিষ্ঠা করা ‘চার্চ অভ আলেকজান্দ্রিয়া’র অনুসারীরা কপটিক খ্রিস্টান হিসেবে পরিচিত।
ইজিপশিয়ান স্ট্রিট লিখেছে, আনুষ্ঠানিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও গতবছর এক অনুষ্ঠানে পোপ দ্বিতীয় তাওয়াদ্রুজ বলেছিলেন, মিশরে কপটিক খ্রিস্টানদের সংখ্যা দেড় কোটি, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৬ শতাংশ।