শশিকলার স্বপ্নভঙ্গ

ভারতের তামিলনাডু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া আর হল না ভিকে শশিকলার, বদলে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাগারে যেতে হচ্ছে তাকে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2017, 06:12 AM
Updated : 14 Feb 2017, 07:05 AM

দুর্নীতির মামলায় মঙ্গলবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট, চার বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তার, খবর এনডিটিভির।

চেন্নাইয়ের শহরতলীর সমুদ্রতীরবর্তী একটি অবকাশ কেন্দ্রে অবস্থানরত এআইএডিএমকে নেত্রী শশিকলাকে চেন্নাই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

এর মাধ্যমে শশিকলার তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সব সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেল, পাশাপাশি তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রীত্ব নিয়ে জমে ওঠা নাটকেরও অবসান ঘটল। আগামী ১০ বছর শশিকলা কোনো নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারক পৃথকভাবে তাদের রায় দেন, কিন্তু অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে উভয়েই শশিকলাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন।

এ মামলাটি মূলত তামিলনাডুর চার মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রী জয়ারাম জয়ললিতার বিরুদ্ধে ছিল। তার সহযোগী হিসেবে মামলায় শশিকলাদের নামও ছিল। ডিসেম্বরে জয়ললিতার মৃত্যু হওয়ায় রায়ে জয়ললিতার ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত কোনো আলোচনা করা হয়নি।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না শশিকলা। তিনি তামিলনাডুর ক্ষমতাসীন দল এআইএডিএমকের ১২০ জন বিধায়ককে নিয়ে একটি অবকাশ কেন্দ্রে অবস্থান করছিলেন। দলে শশিকলার প্রতিদ্বন্দ্বী পনিরসেলভামের পক্ষে বিধায়কদের যোগ দেওয়া ঠেকাতেই তাদের ওই অবকাশ কেন্দ্রে রাখা হয়।

জয়ললিতার মৃত্যুর পর তার একান্ত অনুগত পনিরসেলভামই মুখ্যমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু জয়ললিতার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী হিসেবে পরিচিত শশিকলা পনিরসেলভামকে সরিয়ে নিজে মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইছিলেন। এক্ষেত্রে দলের সমর্থনও আদায় করেছিলেন তিনি।

এক বৈঠকে শশিকলাকে দলের সাধারণ সম্পাদক করে পনিরসেলভামকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলে দল। দলের নির্দেশে প্রথমে রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করলেও পরে বেঁকে বসেন পনিরসেলভাম।

নিজের মুখ্যন্ত্রীত্বের বৈধতার প্রমাণ করতে বিধানসভায় আস্থা ভোট নেওয়ার আর্জি জানান রাজ্যপালের কাছে।

কিন্তু শশিকলার পক্ষে আস্থা ভোটে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত বিধায়ক থাকায় তার জয় হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু আদালতের রায় পরিস্থিতি পুরোপুরি উল্টে দিল।

শশিকলা কখনো কোনো নির্বাচনে অংশ নেননি। এমনকি কখনও দলের কোনো পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। তাই কখনো জনসমর্থনের পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া শশিকলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টায় তামিলনাডুর অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।