যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের পক্ষে ইহুদিদের বিক্ষোভ-সমাবেশ

শরণার্থী এবং ৭ মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাকে যুক্তরাষ্ট্রের চেতনার পরিপন্থি অভিহিত করে বিক্ষোভে সোচ্চার হয়েছেন ইহুদি আমেরিকানরা।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2017, 04:41 PM
Updated : 13 Feb 2017, 05:17 PM

মুসলিম-আমেরিকানদের অধিকার ও মর্যাদার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রোববার নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, ম্যাসেচুসেটস, ইলিনয়, কলরাডো, পেনসিলভানিয়া, নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

‘ন্যাশনাল ডে অব জুইশ এ্যাকশন ফর রিফ্যুজি’ শিরোনামে জাতীয় ভিত্তিক এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল ‘হিব্রু ইমিগ্র্যান্ট এইড সোসাইটি’ নামক আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

নিউ ইয়র্কে দিনভর বৃষ্টির মধ্যেই শত শত ইহুদি অংশ নেন ব্যাটারি পার্কের সমাবেশে।

ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার নির্বাহী আদেশকে অ-আমেরিকান আর অসাংবিধানিক অভিহিত করে এ ধরনের যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত না হলে ‘আমেরিকার গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য বিপন্ন হয়ে পড়বে’ বলে মন্তব্য করেন নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়ো।

তিনি সবাইকে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধ অক্ষুন্ন রাখার পক্ষে সংগঠিত হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, “সব ধরনের গণবিরোধী কর্মকান্ড রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য নজিরের দেশ আমেরিকায় মুসলিমদের অধিকারকে খাটো করে দেখার কোনও অবকাশ নেই।”

সিটি মেয়র ব্লাসিয়ো বলেন, “সহজ-সরল অভিবাসীদের গ্রেফতার অভিযানের যে তান্ডব শুরু করা হয়েছে, তা গোটা সমাজ ব্যবস্থাকে সন্ত্রস্ত করেছে। এভাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অটুট রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।”

ম্যানহাটান বরো প্রেসিডেন্ট গ্যাল ব্রিওয়ার, পাবলিক এডভোকেট লেটিশা জেমস এবং সিটি কম্পট্রোলার স্কট স্ট্রিঙ্গারও ইহুদি-মুসলিম ঐক্য আরো জোরদার করার আহবান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

সানফ্রান্সিসকো-বে এলাকার সমাবেশে বক্তৃতাকালে রাব্বাই লেইডার বলেন, “ট্রাম্পের কর্মকান্ডে আমেরিকার সুমহান ঐতিহ্য যে বিপন্ন হয়ে পড়েছে তা আমরা এখন উপলব্ধি করতে পারছি।”

“বিমানবন্দর থেকে বিশেষ জাতিগোষ্ঠী আর ধর্মের কারণে লোকজনকে ফিরিয়ে দেওয়ার কোনও উদাহরণ যুক্তরাষ্ট্রে নেই। এমন অমানবিক কাজকে সভ্য বিশ্বের কেউই মেনে নিতে পারেন না।”

মার্কিন সিনেটের ডেমক্র্যাট-লিডার নিউ ইয়র্কের সিনেটর চাক শ্যুমার ১২ ফেব্রুয়ারি সিবিএস টিভির “ফেস দ্য ন্যাশন’ অনুষ্ঠানে বলেন, “এখনও ঐ গণবিরোধী নির্বাহী আদেশগুলোকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার একটি সুযোগ আছে। আমি ভাবছি এটিই উত্তম ব্যবস্থা। কারণ, এসব নির্বাহী আদেশ এতই খারাপ যে, গোটা জনজীবনকে ক্ষেপিয়ে তুলেছে।”

ওদিকে, আপিল কোর্টে পরাজিত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসন বিরোধী এবং সন্ত্রাসী ঠেকানোর অভিপ্রায়ে আরও কঠোর পন্থা অবলম্বনের জন্যে নতুন একটি নির্বাহী আদেশ জারির অঙ্গীকার করায় আমেরিকানরা আরও বেশি ক্ষেপে উঠেছে।