ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার টার্গেট মুসলিমরা কিনা, খতিয়ে দেখবে আদালত

মুসলিমপ্রধান সাত দেশের নাগরিকদের ওপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রকৃত কারণ কি, বিশেষত, মুসলিরা এর টার্গেট হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনের অ্যাটর্নি জেনারেল বব ফার্গুসন।

>>রয়টার্স
Published : 13 Feb 2017, 02:23 PM
Updated : 13 Feb 2017, 02:23 PM

২৭ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে শরণার্থী ও মুসলিমপ্রধান সাত দেশ ইরাক, ইরান, সিরিয়া, লিবিয়া, সুদান, সোমালিয়া ও ইয়েমেনের নাগরিকদের উপর যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ট্রাম্প।

তার এ আদেশ অসাংবিধানিকভাবে মুসলিম কিংবা ইসলাম বিদ্বেষের জেরে দেওয়া কিনা তা খতিয়ে দেখতে গতরোববার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের লেখা ইমেইল ও লিখিত নথি জোগাড়ের জোর প্রচেষ্টা চালানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ফার্গুসন। তিনি আরও বলেন, (এর সঙ্গে জড়িত) প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পদচ্যুত করতেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিচার বিভাগের সাবেক এক আইনজীবী জন য়ু বলেছেন, “কোনও প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রেই তার নির্বাহী আদেশের উদ্দেশ্য কখনও খতিয়ে দেখা হয়নি। এক্ষেত্রে বিচারবিভাগ তার তদারকির আওতা অনেকখানি বাড়িয়েই প্রেসিডেন্টসহ গোটা নির্বাহী শাখা কি করেছে তা দেখবে।”

ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ ভিসা থাকার পরও ওই সব দেশের নাগরিকদের বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়। যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা ও বিক্ষোভ শুরু হয়।

পরে যুক্তরাষ্ট্রের একজন ফেডারেল জাজ ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দেন।

ফেডারেল জাজের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল আদালতে যায় হোয়াইট হাউসের পক্ষে এই মামলা লড়া যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট।

কিন্তু ৯ ফেব্রুয়ারি ফেডারেল আপিল আদালত ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের আবেদন খারিজ করে দেয়।

ওইদিন সানফ্রান্সিসকোর নাইন্থ সার্কিট আপিল কোর্টের তিন বিচারক তাদের সর্ববম্মত সিদ্ধান্তে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ ওই নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। সাত দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দিলে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হবে বলে দাবি করলেও সরকার এর পক্ষে কোনও প্রমাণ হাজির করতে পারেনি।

ওই আদেশের পর শরণার্থীদের ক্ষেত্রে যে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, তাও আপাতত বাতিল হয়ে গেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আদালতের সিদ্ধান্তের জন্য বিচারকদের কড়া সমালোচনা করে এসেছেন। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা প্রশ্নাতীত বলেও রোববার ফক্স নিউজে দাবি করেছেন ঊর্ধ্বতন নীতি উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার।

সরকারের বিভিন্ন শাখার মধ্যে ক্ষমতার ভিন্নতা থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের আদালতও অতীতে কোনও আইনের পেছনের উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখার বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থেকেছে। কিন্তু জাতিগত কিংবা ধর্মীয় বৈষম্যের প্রশ্নে আদালত কখনও কখনও কোনও অর্ডিন্যান্সের উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখার অনুমতি দিয়েছে।