নাইন্থ সার্কিট আপিল কোর্ট বৃহস্পতিবার এক আদেশে বলেছে, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের একটি অংশ স্থগিত করে নিম্ন আদালত যে আদেশ দিয়েছে, আপিল আদালত তা বহাল রাখছে।
এই আদেশে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এক টুইটে তিনি বলেছেন, এর সঙ্গে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত এবং বিষয়টি তিনি আদালতেই দেখবেন।
আদালতের ওই আদেশকে ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ আখ্যায়িত করে পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরাই শেষ পর্যন্ত এই মামলা জিতব।”
স্যান ফ্রান্সিসকোর নাইন্থ সার্কিট আপিল কোর্টের তিন বিচারক তাদের সর্ববম্মত সিদ্ধান্তে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ ওই নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। সাত দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দিলে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হবে বলে দাবি করলেও সরকার এর পক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি।
বিবিসি লিখেছে, এই আদেশের ফলে ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেনের বৈধ ভিস ও কাগজপত্রধারী যাত্রীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া যাবে না।
সেই সঙ্গে বিশ্বের যে কোনো দেশের শরণার্থীদের ক্ষেত্রে যে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, তাও আপাতত খাটবে না।
এই আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে ওয়াশিংটনের অ্যাটর্নি জেনারেল বব ফার্গুসন বলেন, এটা তার রাজ্যের জন্য একটি বড় বিজয়।
নিউ ইয়র্কের মেয়র বিল ডে বালসিও বলেন, “আমরা সব সময় আমাদের প্রতিবেশীদের পাশে আছি, তারা যেখান থেকেই আসুক না কেন। এটাই আমাদের ঐতিহ্য।”
হোয়াইট হাউজের পক্ষে এই মামলা লড়া যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা আপিল আদালতের আদেশ পর্যালোচনা করে দেখছে এবং সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগগুলো খতিয়ে দেখছে।
সেক্ষেত্রে এখনই এ মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র সরকার সার্কিট কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেলে সেখানেই নির্ধারিত হবে গত ২৭ জানুয়ারি ট্রাম্পের দেওয়া নির্বাহী আদেশের ভাগ্য।
বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আট বিচারকের মধ্যে চারজন নিয়োগ পেয়েছেন রিপাবলিকানদের আমলে, আর বাকি চারজন ডেমোক্র্যাট সরকারের নিয়োগ পাওয়া।
ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশের বিরোধিতা করে আসছেন শুরু থেকেই। ওয়াশিংটন, মিনেসোটাসহ ১৬ অঙ্গরাজ্যের ডেমক্র্যাটরা আইনগত লড়াইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। আর তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নসহ বেশ কটি মানবাধিকার সংগঠন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি লাভলু আনসার জানান, এদিকে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের পর শুনানির তারিখ পেতে লম্বা সময় লেগে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার ৯০ দিন পার হয়ে যেতে পারে বলে আশা করছেন প্রবাসীদের অনেকে।
নিউ ইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে আন্দোলনে থাকা ‘নিউইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশনের’ অন্যতম সংগঠক মোহাম্মদ এন মজুমদার আপিল আদালতের রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এর মধ্য দিয়ে জনতার মতামতের প্রতিফলন ঘটল, সত্যের জয় হল।”