সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে ‘সাপের মাথা’ সম্বোধন করে ওই চিঠিতে লেখা, যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিরই সরাসরি ফল ছিল ৯/১১ হামলা ও নিরীহ মানুষের মৃত্যু।
ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ই ১৮ পাতার দীর্ঘ এ চিঠিটি লেখেন ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ারে হামলার স্বঘোষিত হোতা খালিদ শেখ মোহাম্মদ।
চিঠির তারিখ ৮ জানুয়ারি, ২০১৫ দেওয়া হলেও দুই বছর পর ওবামার মেয়াদের একেবারে শেষ দিকে সেটি হোয়াইট হাউসে পৌঁছায়।
এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়, ডিফেন্স অ্যাটর্নি ডেভিড নেভিন চিঠির একটি কপি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ওয়েবসাইটে এটি এখনও পোস্ট করা হয়নি।
গুয়ান্তেনামো বে’র মার্কিন সামরিক কারাগারে আটক শেখ খালিদ মোহাম্মদ সেখান থেকেই চিঠিটি পাঠান।
এতে লেখা হয়, “নাইন/ইলেভেন এ আপনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আমরা শুরু করিনি; বরং তার জন্য আপনি এবং আমাদের দেশে আপনাদের বসানো একনায়করা দায়ী।”
“সফল ওই দিনে যখন ছিনতাইকারীরা নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারের দিকে উড়োজাহাজ দুইটি উড়িয়ে নিচ্ছিল তখন খোদা আমাদের পক্ষে ছিলেন।”
“নাইন/ইলেভেন হামলা সফল করতে এবং পুঁজিবাদ ধ্বংস করে আপনাদের প্যান্ট খুলে দিতে আল্লাহ আমাদের সাহায্য করেছেন। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার নামে আপনাদের দীর্ঘদিনের মুখোশ খুলে ভণ্ডামিটা গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিতেও আল্লাহ আমাদের সাহায্য করেছেন।”'
ফিলিস্তিনিদের সংকটাপন্ন অবস্থার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসরয়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের সমালোচনা করে খালিদ বলেন, “গাজায় নিহত আমাদের ভাই-বোনদের এবং সেখানকার শিশুদের রক্তে আপনাদের হাত এখনও ভেজা।”
বিমান ছিনতাই করে প্রায় তিনহাজার মানুষকে হত্যার অভিযোগে খালিদের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি হতে পারে। নিজের বিচার নিয়ে তিনি লেখেন, “ক্রুসেডাররা যখন মৃত্যুদণ্ড দেবে তখন কি সত্যিই আমার মৃত্যু হবে?”
“আর যদি আপনাদের আদালত আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ই তবে আমি আরও বেশি খুশি হব। কারণ তখন আমি আল্লাহ, নবীদের এবং বিশ্বজুড়ে আমার ওইসব বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবো যাদের আপনারা অন্যায়ভাবে হত্যা করেছেন। আমি শেখ ওসাবা বিন লাদেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারব।”
এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়, ২০০৩ সালের মার্চ থেকে খালিদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৮৩ বার ওয়াটারবোডিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।
চিঠিতে তার বিচার সম্পর্কে খালিদ লেখেন, “যদি আপনাদের আদালত আমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় তবে আমাকে আমার সেলে একা রাখলে আমি খুশি হব। তাহলে আমি আমার বাকি জীবন আল্লাহর প্রার্থনা করে কাটাতে পারব এবং আমরা সব পাপ ও অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেব।”