মিয়ানমারে দমনাভিযানে হাজারো রোহিঙ্গা নিহতের আশঙ্কা

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমনাভিযানে এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটি থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

>>রয়টার্স
Published : 8 Feb 2017, 06:42 PM
Updated : 8 Feb 2017, 06:42 PM

তাদের কথায় আগের প্রকাশিত পরিসংখ্যানের চেয়ে রোহিঙ্গা নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

বাংলাদেশে কাজ করা জাতিসংঘের দুটি পৃথক সংস্থার ওই দুই কর্মকর্তা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সঙ্কটের যে চিত্র উদঘাটিত হচ্ছে তার ভয়াবহতা বহির্বিশ্ব পুরোপুরি অনুধাবন করতে পারেনি।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মিয়ানমার থেকে প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, “এখন পর্যন্ত শত শত মৃত্যুর কথা বলা হয়ে আসছে। এটি সম্ভবত কম করেই বলা হচ্ছে, আমরা হয়ত কয়েক হাজারের দিকে তাকাতে পারি।”

আলাদা আলাদা সাক্ষাৎকারে দুই কর্মকর্তাই জানিয়েছেন, গত চার মাসে তাদের সংস্থাগুলো শরণার্থীদের যেসব সাক্ষ্য জোগাড় করেছে তা থেকে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলেই ধারণা পাওয়া যায়। 

ওদিকে, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জাও হতাই বলছেন, সামরিক কমান্ডারদের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবরে যারা সীমান্ত পুলিশের চৌকিতে হামলা চালিয়েছিল সেই রোহিঙ্গা জঙ্গিদের বিদ্রোহ দমনাভিযানে একশরও কম মানুষ নিহত হয়েছে।

কিন্তু জাতিসংঘের কর্মকর্তারা নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলছেন জানিয়ে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে হতাই বলেন, “তাদের উল্লেখিত সংখ্যা আমাদের সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি আমাদেরকে খতিয়ে দেখতে হবে।”

মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম প্রায় জাতিবিদ্বেষের মতো পরিস্থিতিতে বাস করছে। তাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের অনেকেই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী বলে মনে করে।

জাতিসংঘের দুই কর্মকর্তা রোহিঙ্গা নিহতের তথ্য দেওয়া ছাড়াও জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা ওএইচসিএইচআর এর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন রয়টার্সকে দিয়েছে। শুক্রবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে ওএইচসিএইচআর।

এ প্রতিবেদনে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উত্তর-পশ্চিম মিয়ানমারে সেনাদের গণহারে হত্যাযজ্ঞ চালানো এবং ধর্ষণের ঘটনা উঠে এসেছে। এসব ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

চলতি সপ্তাহে অং সাঙ সুচির নেতৃত্বাধীন মিয়ানমার সরকার বলেছে, জাতিসংঘ প্রতিবেদনে উঠে আসা সব অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে তারা।

এর আগে সরকার বরাবরই হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের সব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।