যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের দুই দিন পর রোববার ইসরায়েল এ অনুমতি দিল।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসন অধিকৃত ভূমিতে ইসরায়েলের বাড়ি নির্মাণের সমালোচনা করেছিল এবং নির্মাণ কাজ বন্ধে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিল।
গত ডিসেম্বরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোটের মাধ্যমে একটি প্রস্তাবনা পাশ হয়। ওই প্রস্তাবনায় পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের অধিকৃত ভূমিতে ইসরায়েলের বসতি নির্মাণ বন্ধের আহ্বান জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ওই প্রস্তাবে ভোট দানে বিরত থাকে। যার নিন্দা জানিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের অধিকৃত ওই ভূমি নিজেদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের জন্য দাবি করে আসছে।
ইসরায়েল আশা করছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকার তাদের পক্ষে অবস্থান নেবে।
নেতানিয়াহু বলেন, তিনি রোববার টেলিফোনে প্রথমবারের মত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপ করবেন।
“আমাদেরকে অনেক বিষয় মোকাবেলা করতে হবে। সেগুলোর মধ্যে ইসলায়েল-ফিলিস্তিন বিষয়, সিরিয়া পরিস্থিতি এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের বাড়তে থাকা হুমকি রয়েছে।”
জেরুজালেমের সিটি হল থেকে পিসগাত জীভ, রামাত সলোমো ও রামতের পৌর এলাকায় ৫৬০টির বেশি হাউজিং ইউনিটের জন্য সর্বশেষ এ বাড়ি নির্মাণের অনুমতি দিল ইসরায়েল।
পৌরসভার পরিকল্পনা ও নির্মাণ কমিটির প্রধান মেইর তুরজেমান ইসরায়েল রেডিওকে বলেন, ওবামা প্রশাসনের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বসতি নির্মাণের অনুমতি দেওয়া স্থগিত রাখা হয়েছিল।
“আমি ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের অপেক্ষা করতে বলেছিলাম। কারণ, জেরুজালেমে আমাদের ভবন নির্মাণ নিয়ে তার কোনও আপত্তি নেই।”
আরও কয়েকশ’ ইউনিট নির্মাণের প্রস্তাব অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ এ পদক্ষেপের কড়া নিন্দা জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রদাইনাহ রয়টার্সকে বলেন, “আমরা ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের বসতি নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”
ওবামা প্রশাসন অধিকৃত এলাকায় ইসরায়েলের বসতি নির্মাণের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও ট্রাম্প এবং তার দল এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের পক্ষেই কথা বলছে।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত হিসেবে ট্রাম্পের বেছে নেওয়া নিক হ্যালিও ইসরায়েলের পক্ষ হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সমালোচনা করেছেন।
নির্বাচনে জয়লাভ করার পর ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি তেল আবিব থেকে ইসরায়েলে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সরিয়ে জেরুজালেমে নেবেন।
ইসরায়েল পুরো জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী মনে করে। যদিও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অধিকাংশই এর স্বীকৃতি দেয়নি। তারা শান্তি আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান দেখতে চায়।
ইসরায়েলে ট্রাম্পের নিয়োগ দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রাইডম্যানও বসতি নির্মাণের পক্ষে।
তবে ইসরায়েলের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প কী সিদ্ধান্ত নেবেন সে বিষয়ে মন্তব্য করার সময় এখনও আসেনি।