আমেরিকানদের জন্য চাকরির বাজার এবং ব্যবসার সুযোগ উন্মুক্ত করার আশ্বাস দিয়ে নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হন ধনকুবের এই ব্যবসায়ী।
কট্টর জাতীয়তাবাদের আলোকেই নির্বাচনী প্রচারে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন তিনি; বলেছিলেন মার্কিন বাজারে চীনের একাধিপত্য নিয়েও।
শুক্রবার অভিষেকের ভাষণেও সেই আলোকে আমেরিকান পণ্য কিনতে এবং চাকরিতে নিজের দেশের নাগরিকদের নিতে ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান ট্রাম্প।
ওয়াশিংটনে কনকনে শীতের মধ্যে তার এই গরম ভাষণ শুনে খুশি হলেও সমর্থকরা নতুন প্রেসিডেন্টের ট্রেডমার্ক হিসেবে পরিচিত ‘মেইক আমেরিকা গ্রেইট এগেইন’ লেখা লাল টুপিগুলো ভিনদেশে তৈরি দেখে বেজার হয়েছেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
এদেরই একজন ৪৪ বছর বয়সী রব ওয়াকার। স্ত্রীকে সঙ্গে করে জর্জিয়া থেকে রাজধানীতে আসেন প্রিয় নেতা ট্রাম্পের বক্তৃতা শুনতে। পথে গাড়ি থামিয়ে কিনে নেন আমেরিকাকে পুনরায় শ্রেষ্ঠ বানানোর প্রতিজ্ঞা লেখা টুপিটি।
“নিশ্চয়ই এটি চীন বানায়নি”, জপতে জপতে টুপির ভেতরটা পরীক্ষা করে দেখছিলেন ওয়াকারের স্ত্রী ৩৬ বছরের অ্যাবি। খানিক পরেই চুপসে গেলেন, চিৎকার করে বললেন, “চীন!”।
“থাক কাউকে বলার দরকার নেই,” পাশে বসা স্বামীকে এভাবেই সান্ত্বনা দেন অ্যাবি।
শপথের দিন ওয়াশিংটনের রাস্তায় মাত্র ২০ ডলারে বিকোচ্ছিল ওই টুপিগুলো। এর বেশিরভাগই বাংলাদেশ, চীন বা ভিয়েতনামের কারখানাগুলোতে বানানো বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
ট্রাম্পের ওয়েবসাইটে থাকা টুপিগুলোর চেয়ে এগুলোর দাম কম হওয়ায় সমর্থকরাও এগুলোতেই ঝুঁকছিলেন। ওয়েবসাইট থেকে কিনলে টুপিগুলোর দাম পড়ছে ২৫ থেকে ৩০ ডলার।
অভিষেকের দিন টুপি কিনেছে ভাইবোন ভিক্টোরিয়া স্কট ও অ্যান্ড্রু স্কট। ভিক্টোরিয়ার ২৫ ডলার দামি টুপিটি বানানো হয়েছে চীনে, তা নিয়ে ভ্রূক্ষেপ নেই ১৩ বছরের এই কিশোরীর।
এক বছরের ছোট অ্যান্ড্রু তার টুপি পরীক্ষা করে উচ্চারণ করলো ‘বাঙ্কলাদেশ’; পাশে থাকা তার বাবা শুধরে দিয়ে বললেন, “তুমি কি বাংলাদেশের কথা বলছো?”
টেক্সাস থেকে ওয়াশিংটনে এসেছে ২৫ বছরের জশুয়া রোজাস ও ২৮ বছরের এলিসা ইয়ং; তাদেরও মাথায় ‘মেইক আমেরিকা গ্রেইট এগেইন’ টুপি।
“যখনি এটা দেখলাম তখনি এটা কিনে ফেললাম। রাস্তার পাশের দোকানে মাত্র ২০ ডলারে পেয়েছি এটি,” বলেন এলিসা।
এই টুপি কি আমেরিকায় বানানো? এমন প্রশ্নের জবাবে এলিস টুপি খুলে পরীক্ষা করতে করতে বললেন, “ঠিক জানি না, এটি কোথায় বানিয়েছে।”
একটু পরেই কঁকিয়ে উঠলেন, “ওহ না! এটা তো দেখছি ভিয়েতনামের।”
একই অবস্থা নিউ ইয়র্কের কুইন্স থেকে আসা রবার্ট মরিসনেরও। তার দুটি টুপি আছে, একটি রাস্তার পাশের হকার থেকে ২০ ডলারে কেনা ‘মেইক আমেরিকা গ্রেইট এগেইন’ লেখা হ্যাট, অন্যটি নিউ ইয়র্ক লেখা ইয়াঙ্কি ক্যাপ।
“দুটোই চীনের বানানো,” বলেন তিনি।
সবাই অবশ্য অস্টিন আরাকোর মত বুদ্ধিমান নন। ২২ বছর বয়সী আরাকোর বাস আরকানসোতে। ট্রাম্পের সিগনেচার হ্যাট পরেই তার অভিষেক দেখতে ওয়াশিংটনে আসেন তিনি।
বললেন, ট্রাম্প জেতার পরপরই হ্যাটটি কেনেন তিনি।
“তার ওয়েবসাইট থেকে কিনেছি; আমি চেয়েছি যেন এর মাধ্যমে তার তহবিলেও খানিকটা সাহায্য করা যায়; আমি ধরা খেতে চাইনি। এজন্য পরিবহন ব্যায়সহ ৩০ ডলারেই হ্যাটটি কিনে নিয়েছি।”