‘দেরি করবেন না ট্রাম্প’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর হোয়াইট হাউসে প্রথম দিনেই অভিবাসননীতি কঠোর করা, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলা এবং বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নীতিগুলোর রাশ টেনে ধরার কাজ শুরু করে দিবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

>>রয়টার্স
Published : 20 Jan 2017, 06:49 AM
Updated : 20 Jan 2017, 06:50 AM

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর উল্লিখিত বিষয়গুলোতে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ দিন থেকেই হোয়াইট হাউসের পর্ব শুরু হবে ট্রাম্পের। 

৮ নভেম্বরে জয়ী হয়ে ডেমোক্রেট ওবামার উত্তরসূরী নির্বাচিত হন রিপাবলিকান ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার একটি সামরিক বিমানে পরিবারসহ তিনি রাজধানী ওয়াশিংটনে আসেন।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটলে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শপথ গ্রহণ করবেন ট্রাম্প।  

সহযোগীরা জানিয়েছেন, ব্যাপক ক্ষমতার প্রেসিডেন্সিয়াল কলমটি ব্যবহার করতে দেরি করবেন না ট্রাম্প, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই বাস্তবায়ন করা যায় এমন বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন তিনি।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের মুখপাত্র শন স্পিসার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা শুক্রবার, পরবর্তী সাপ্তাহিক ছুটির সময় এবং আগামী সপ্তাহে ‘তৎপরতা’ আশা করতে পারেন।

তিনি বলেন, “শুধু প্রথম দিনেই না, দ্বিতীয় দিনে, তৃতীয় দিনেও সত্যিকার পরিবর্তনের বিষয়গুলো শুরু করার ব্যাপারে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমার ধারণা আগামী কয়েকদিন এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আপনারা এগুলো দেখতে যাচ্ছেন।” 

শনিবার ভার্জিনিয়ার ল্যাঙলিতে সিআইএ সদরদপ্তর পরিদর্শনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় এই গোয়েন্দা সংস্থা ও এর বিদায়ী প্রধানের কঠোর সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা চলার সময় রাশিয়া সাইবার হামলা চালিয়েছে, সিআইএ-র এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রথমে প্রশ্ন তোলেন তিনি, পরে আবার অভিযোগটি মেনে নেন। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নাৎসি জার্মানির সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি। 

স্বাস্থসেবা, জলবায়ু নীতি, অভিবাসন, জ্বালানি ও অন্যান্য বহু বিষয়ে দুইশরও বেশি সম্ভাব্য নির্বাহী আদেশ পুনর্নীরিক্ষা করে ট্রাম্পের বিবেচনার জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন তার উপদেষ্টারা। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি নেই, ট্রাম্পের টিমের এমন একজন সদস্যের ভাষ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে কতোগুলো আদেশ তিনি প্রাথমিকভাবে অনুমোদন করবেন তা পরিষ্কার নয়।

“তিনি দেখাতে চান, তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন, ওয়াশিংটনের প্যাচে আটকা পড়ে থাকবেন না,” বলেছেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট বিষয়ক ইতিহাসবিদ জুলিয়ান জেলিজার।

তার আগে ওবামাসহ অন্যান্য প্রেসিডেন্টরাও হোয়াইট হাউসে তাদের প্রথম সপ্তাহগুলোতে এই কৌশল কাজে লাগিয়েছিলেন।

১২-জাতির ট্রান্স-প্যাসিফিক অংশীদারিত্ব বাণিজ্য চুক্তি এবং কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে করা নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট চুক্তি থেকে সরে আসার পরিকল্পনা নিয়েও ট্রাম্প দাপ্তারিক নোটিশ দিবেন বলে জানিয়েছেন স্পিসার।

“আমার ধারণা খুব অল্প সময়েই আমরা এগুলো হতে দেখবো,” বলেন তিনি। 

শুক্রবার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ওবামার আট বছরের মেয়াদকাল শেষ হচ্ছে। প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি তার নির্বাহী ক্ষমতা বারবার ব্যবহার করেছেন। ওই সময় রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস তার অভিবাসন ও পরিবেশ আইন পরিবর্তনের উদ্যোগে বাধা দিয়েছিল।

ওবামার ওইসব নির্বাহী আদেশের অনেকগুলোই এখন উল্টে দেওয়ার জন্য নিজের লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেছেন ট্রাম্প।