ট্রাম্পের অভিষেকে তাইওয়ান প্রতিনিধি দেখতে চায় না চীন

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে তাইওয়ানের কোনও প্রতিনিধিকে ঢুকতে না দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে চীন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2017, 01:29 PM
Updated : 18 Jan 2017, 01:29 PM

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেন, “আমরা আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি তারা যেন তাদের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তথাকথিত তাইওয়ান প্রতিনিধিদলকে প্রবেশের অনুমতি না দেয়। এমনকি তাইওয়ানের সঙ্গে যেন আনুষ্ঠানিক কোনও যোগাযোগ স্থাপন না করে।”

“এরই মধ্যে চীন সুনির্দিষ্ট এবং কোনো ধরনের বিভ্রান্তির অবকাশ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন এবং ট্রাম্পের দলের কাছে (তাইওয়ান বিষয়ে) নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে।”

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত কুই তিয়ানকাই চীনের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন নিউ ইয়র্কের আবাসন  ব্যবসায়ী ট্রাম্প।

নির্বাচনে জয়লাভের পর তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন ফোনে ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানান। যা ভালোভাবে নেয়নি চীন।

তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন প্রদেশ মনে করা চীনের এ বিষয়ে ‘এক চীন নীতি’ রয়েছে এবং এই নীতি অনুসরণের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সঙ্গে তারা সম্পর্ক স্থাপন করে।

প্রায় চার দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র এক চীন নীতি মেনে আসছে।

কিন্তু ওই প্রথা ভেঙে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপ এবং পরে ‘যুক্তরাষ্ট্র এক চীন নীতি মানতে বাধ্য নয়’ ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে চীন।

এক চীন নীত মেনে চলার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক উন্নয়নের অগ্রগতি নির্ভর করছে বলেও সতর্ক করেছিল বেইজিং।

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে তাইওয়ানের প্রতিনিধি দলের উপস্থিত থাকার ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের হবু প্রেসিডেন্ট এবং বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের একটি প্রতিনিধি দল ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে যাবে। তাইওয়ানের সাবেক প্রধান ইউ শি-কুনের নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধি দলে তাইওয়ানের একজন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং কয়েকজন সংসদসদস্য রয়েছেন।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তাইওয়ান প্রতিনিধি দলের পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক নেই বলে জানিয়েছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র।

১৯৪৯ সালে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে গৃহযুদ্ধে হেরে যাওয়ার পর জাতীয়তাবাদী বাহিনী তাইওয়ানে পালিয়ে যায়।

তাইওয়ানকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে কখনওই তেমনভাবে শক্তি প্রয়োগ করেনি চীন। নিজেদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে গর্বিত তাইওয়ানও কখনও চীনের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়নি।

তাইওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্ট সাইকে নিয়ে কিছুটা উদ্বেগে রয়েছে চীন। চীনের ধারণা, সাই তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এনে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

এ মাসে মধ্য আমেরিকা ভ্রমণের সময় যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছিলেন সাই। যেখানে সাংবাদিকদের তিনি বলেনছেন, তিনি চীনের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখতে চান।