মঙ্গলবার সকালে নাইজেরীয় বিমান বাহিনী হামলাটি চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসা সংস্থা মিতস সঁ ফঁতিয়ার (এমএসএফ) এক মুখপাত্র।
দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বোর্নো রাজ্যের রানে এই হামলা হয় বলে জানিয়েছে এমএসএফ। নাইজেরীয় সামরিক বাহিনীর আঞ্চলিক সেনা কমান্ডার মেজর জেনারেল লাকি ইরাবর ঘটনাস্থল কালা বালগে এলাকা বলে জানিয়েছেন। এলাকাটি রানের অন্তর্ভুক্ত।
বোর্নো রাজ্যের রাজধানী মাইদুগুরিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরাবর জানিয়েছেন, বহু সংখ্যক বেসামরিক নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে এমএসএফ ও রেডক্রসের স্বেচ্ছাসেবীরাও রয়েছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “যে কোনোভাবেই হোক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বিমান হামলায় ঠিক কতোজন নিহত হয়েছেন সে বিষয়ে আমরা এখনও নিশ্চিত নই।”
কীভাবে এই ঘটনা ঘটলো তা এত তাড়াতাড়ি নির্ধারণ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এমএসএফ এর মুখপাত্র টিম শেঙ্ক বলেন, “অন্তত ৫২ জন নিহত ও ১২০ জন আহত হয়েছেন। ওই এলাকায় থাকা এমএসএফের মেডিকেল ও সার্জিক্যাল টিম রোগীদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০১০ সাল থেকে বিদ্রোহ শুরু করে বোকো হারাম। তারপর থেকে তাদের হামলায় এ পর্যন্ত ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত ও ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ এসব উদ্বাস্তুদের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এ রকম একটি শিবিরেই হামলাটি হয়েছে।
এক ইমেইল বিবৃতিতে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ বুহারির এক মুখপাত্র ফেমি আদেসিনা বলেছেন, “অভিযান চলাকালে দুঃখজনক এই ভুলের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।”
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বোকো হারামের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিল নাইজেরীয় সামরিক বাহিনী। প্রেসিডেন্ট বুহারি জানিয়েছেন, গত মাসে বের্নো রাজ্যের সামবিসা বনে বোকো হারামের একটি প্রধান শিবিরের পতন হয়।
‘ওই অভিযানের চূড়ান্ত পর্যায়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে বিদ্রোহীদের মুছে ফেলতে’ বিমান হামলা চালানো হচ্ছিল বলে প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।
বর্ষা মওসুম শেষ হওয়ার পর বোকো হারামের সদস্যরা বন এলাকায় সহজে চলাফেরা করতে শুরু করার পর থেকে গত কয়েক সপ্তাহে হামলা বৃদ্ধি করেছিল জঙ্গিগোষ্ঠীটি।