ট্রাম্প সরকারের সম্ভাব্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘রাশিয়া ঘেঁষা’ টিলারসন 

যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক তেল ও গ্যাস করপোরেশন এক্সন মোবিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেক্স টিলারসন ট্রাম্প সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেছে। রাশিয়ার সঙ্গে এ তেল ব্যবসায়ীর ‘ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক’ রয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2016, 02:02 PM
Updated : 11 Dec 2016, 02:05 PM

যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ একজনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

‘ট্রাম্পের জয়ে সহায়তা করেছে রাশিয়া’ যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র প্রতিবেদনে একথা প্রকাশ পাওয়ার পরপরই টিলারসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনার খবর এল।

এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের মন্ত্রিসভা ও ঘনিষ্ঠজনদের মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা বাড়বে।

গত কয়েক দশক ধরে রাশিয়ায় এক্সনের সম্প্রসারণে মূল ভূমিকা পালন করেছেন ৬৪ বছর বয়সী টিলেরসন।

রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের পর যুক্তরাষ্ট্র দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, যার ঘোর বিরধিতা করেছিলেন টিলারসন।

টিলেরসনকে ‘অর্ডার অব ফ্রেন্ডশিপ’ পুরস্কারে ভূষিত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এটি রাশিয়ায় অন্যতম সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাণনা।

শনিবার সকালে ট্রাম্প টাওয়ারে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন টিলারসন। দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তাদের বৈঠক চলে। এ সপ্তাহে এটি তাদের দ্বিতীয় বৈঠক।

এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা দেওয়া না হলেও হয়ত আগামী সপ্তাহেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে রেক্স টিলারসনের নাম ঘোষণা করতে পারেন ট্রাম্প।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ট্রাম্পের পছন্দের তালিকায় থাকা ২০১২ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মিট রমনি ও আরও তিন সম্ভাবনাময় প্রার্থীর মধ্যে সর্বাগ্রে আছে টিলারসনের নাম।

তবে গুরুত্বপূর্ণ এ পদে কাকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে যে বিষয়ে এখনই কোনও ঘোষণা আসছে না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের মুখপাত্র জেসন মিলার।

টুইটারে মিলার বলেন, “ট্র্যানজিশন আপডেট: আগামী সপ্তাহের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কাউকে বেছে নেওয়ার ঘোষণা আসবে না।”

এনবিসি নিউজে সর্বপ্রথম টিলারসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনার খবর প্রকাশ পায়। খবরে বলা হয়, জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জন বলটনকে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী করতে পারেন ট্রাম্প।

এক্সনের সিইও হিসেবে রাশিয়াসহ ৫০টির বেশি দেশের সঙ্গে কাজ করেছেন টিলারসন।

২০১১ সালে রাশিয়ার রাষ্ট্র মালিকানাধীন সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানি রুসনেফ্ট এর সঙ্গে যৌথভাবে তেল উত্তোলন ও উৎপাদনের বিষয়ে চুক্তি সই করে এক্সন।

‘ফক্স নিউজ সানডে’ তে এর আগে এক সাক্ষাৎকারে টিলারসন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছিলেন, “টিলারসন একজন বাণিজ্য নির্বাহীর চাইতেও বেশি কিছু।”

“আমি বলতে চাচ্ছি, তিনি একজন বিশ্বমানের খেলোয়াড়। তিনি এমন একটি তেল কোম্পানির দায়িত্বে রয়েছেন যেটি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তেল কোম্পানির চাইতে আকারে প্রায় দ্বিগুণ। এটা এমন একটি কোম্পানি যেটা অবিশ্বাস্যভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।”

“আমার জন্য বড় ধরনের সুবিধাগুলোর একটি হচ্ছে, তিনি (এই লাইনের) অনেক খেলোয়াড়দের চেনেন এবং তাদের সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানেন। তিনি রাশিয়ায় বড় ধরনের চুক্তি করেছেন।”

ট্রাম্পের প্রশাসনে এখন পর্যন্ত যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের মধ্যে অল্প কয়েকজনই জলবায়ু পরিবর্তনে মানুষের ভূমিকা থাকার কথা বিশ্বাস করেন, টিলারসন তাদেরই একজন।

ট্রাম্পের জয়লাভের পর এক্সন প্যারিস জলবায়ু চুক্তির সমর্থন করেছে এবং বলেছে, তারা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে কার্বন কর আরোপের পক্ষে।