মস্কো সিরিয়া ও ইউক্রেনের মতো ইস্যুগুলোতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ‘সাংঘর্ষিক অবস্থানে’ যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ওবামা। আমেরিকানদের ‘অনিষ্ট করতে পারে’ এমন সম্পর্কে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে না জড়াতে ট্রাম্পকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক নিয়মের’ বাইরে গেলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শক্তভাবে দাঁড়াতেও উত্তরসূরির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ওবামা বলেন, তিনি আশা করছেন না যে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আদর্শ ও মূল্যবোধকে পাশ কাটিয়ে শুধু পরিস্থিতি বিবেচনায় (রিয়েলপলিটিক অ্যাপ্রোচ) নেবেন।
দুজনই তাদের দুই দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বিদেশের মাটিতে এই বার্লিনেই প্রথম বক্তব্য দিয়েছিলেন ওবামা। আট বছর পর এখন সেখানে তাকে ‘ট্রান্সআটলান্টিক’ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।
ওবামার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্প সিরিয়া ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সমালোচনা করে আসছেন নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকে।
সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উৎখাতে সশস্ত্র লড়াইরত বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপের মিত্ররা। অপরদিকে আসাদের সমর্থনে দেশটিতে বিমান হামলা চালায় রাশিয়া।
আইএস ধ্বংসে ওই অভিযান বলে মস্কোর পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও তাদের বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তু হয় আসাদবিরোধী গোষ্ঠীগুলোও, যার প্রতিবাদে সোচ্চার ছিল ওয়াশিংটন ও তার মিত্র দেশগুলো।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরও ট্রাম্প সিরিয়া ইস্যুতে মস্কোর নীতিকে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তার সঙ্গে পুতিনের ফোনালাপ হওয়ার কথা জানিয়ে ক্রেমলিন বলেছে, এখন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার তিক্ততার অবসান হবে বলে তারা আশা করছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের মিত্র হিসেবে পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদও।
“আমার মনে হচ্ছে সব জায়গায় আমাদের রাজনীতি একটি ‘অস্থির’ পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে,” ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জাতীয়তাবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা এবং ট্রাম্পের বিজয়ের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন তিনি।
ওবামা বলেন, তিনি আশা করছেন ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে একটি গঠনমূলক সম্পর্ক চাইবেন, যেখানে স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে মূল্যবোধকে উপেক্ষা করা হবে না।