প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প: কারা শঙ্কিত আর কারা আশাবাদী?

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের ফলে অনেকে যেমন খুশী তেমনি অনেকেই নাখোশ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Nov 2016, 03:35 PM
Updated : 10 Nov 2016, 04:17 PM

এ পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামল কাদের কাছে আশঙ্কার আর কাদের কাছে বিজয়ের?

ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় যেসব বক্তৃতা দিয়েছেন সেগুলো বিশ্লেষণ করে এবং পাশাপাশি ইন্ডিয়ানার গভর্নর মাইক পেন্সের (যিনি ভাইস-প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন) দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করে এ সম্পর্কে একটি ধারণা দিয়েছে বিবিসি।

নারী

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবার লিঙ্গের বিষয়টি যত বড় ভূমিকা পালন করেছে, এর আগে দেশটির কোনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এমনটি হয়নি। দেশে ‘নারী প্রেসিডেন্ট’ আসবে কি আসবে না, এমন চিন্তাভাবনা নিয়ে এবার ভোট দিয়েছেন অনেকেই।

নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিকে ট্রাম্পের ‘নারী বিষয়ক সমস্যা’কে সামনে নিয়ে এসেছিলেন হিলারি ক্লিনটন। ট্রাম্প যে নারীদের সম্মান দিতে জানেন না, অবমাননা করেন – এ ধরনের বিষয়গুলো হিলারির শেষ দিকের প্রচারণায় উঠে আসে।

কিন্তু এ প্রচারণা যে খুব একটা কাজে আসেনি ভোটের পরিসংখ্যানেই তা পরিষ্কার দেখা গেছে। বুথফেরত জরিপে দেখা যায় ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন ৪২ শতাংশ নারী।

ফল বিশ্লেষণে আরও দেখা যায় যে ৫৩ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ নারী ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছে। যদিও ট্রাম্প-পেন্সকে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৪ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ নারী। আর হিস্পানিক নারী ভোটাররা ট্রাম্পকে নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকলেও ২৬ শতাংশ হিস্পানিক নারী ট্রাম্পকেই ভোট দিয়েছেন।

তারা এখন কী আশা করতে পারেন?

বিবিসির সংবাদদাতা ক্যাটি কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নারী বিষয়ক কয়েকটি বিতর্কিত উক্তি বিশ্লেষণ করেছেন।

ট্রাম্প বলেছিলেন: ‘যেসব নারী গর্ভপাত করে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত’, একজন টিভি উপস্থাপকের ঋতুচক্রের বিষয়কে ইঙ্গিত করে অভদ্র কথা বলেছিলেন তিনি।

তারকা হলে নারীদের সঙ্গে যা খুশী তাই করা যায় এবং নারীদের নিয়ে আরও নানা অপমানকর মন্তব্য নিয়ে ট্রাম্প তীব্র সমালোচনায় পড়লেও তাকে যেসব নারী ভোট দিয়েছেন, তারা বিষয়গুলো দেখছেন ভিন্নভাবে।

কিছু নারী ভোটার ট্রাম্পের এমন মন্তব্যকে খারাপভাবে দেখেনি। বরং অনেক গৃহিনী একে উৎসাহব্যঞ্জক বলে মনে করেছেন। আবার কিছু নারী মনে করেন, নারীদের ঐতিহ্যবাহী ধ্যান-ধারণা ও ভূমিকার প্রসঙ্গই তুলে ধরেছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প শ্রম নীতি ও বাজারে চাকরি সৃষ্টির যে কথা বলেছেন তাতে সমর্থন দিয়েছেন বহু নারী। বিশেষ করে যেসব নারীর শ্রমবাজারে সাফল্য লাভের সুযোগ সীমিত তারা ট্রাম্পের নীতিকে সমর্থন করেছেন।

শ্বেতাঙ্গদের জন্য আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা তৈরির যে প্রতিজ্ঞা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প তাতেও আকৃষ্ট হয়েছেন অনেক শ্বেতাঙ্গ নারী।

তাছাড়া, গর্ভবতী ও প্রবীণ  নারীরাও ট্রাম্প প্রশাসনের আওতায় সুবিধা ভোগ করতে পারে। ট্রাম্পের মেয়ে তাকে একটি নতুন পরিকল্পনা নিতে সহায়তা করেছেন। আর তা হচ্ছে নারীদের জন্য বেতনসহ ছয়মাসের মাতৃকালীন ছুটির ব্যবস্থা করা। যেসব নিয়োগকর্তা নারীদেরকে এ ছুটির  সুযোগ দেন না তাদেরকেই এ প্রস্তাব দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

আর প্রবীণ নারীদের নানারকম মানসিক সমস্যার চিকিৎসার জন্য বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। সেইসঙ্গে নারীস্বাস্থ্যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সংখ্যাও বাড়াবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।