সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন

৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে মঙ্গলবার ভোট দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ। এরই মধ্যে প্রবাসীদের ডাকযোগে ভোট ও অনলাইন ভোট সম্পন্ন হয়েছে। ৩৮টি রাজ্যে আগাম ভোট গ্রহণ হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2016, 10:22 AM
Updated : 8 Nov 2016, 02:50 PM

৮ নভেম্বর চূড়ান্ত দিনের ভোট গ্রহণের পর ডিসেম্বরে হবে ইলেকটরাল ভোট গণনা। এরপর জানুয়ারিতে ফলাফল ঘোষণা।

অভ্যন্তরীণ নানা বিষয় এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এবারের নির্বাচন হয়ে উঠেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। মাঠের পাশাপাশি নির্বাচন জমে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বিভিন্নভাবে খোঁজ রাখার চেষ্টা করছে নির্বাচনের নানান হালচাল। 

দেখে নেয়া যাক, সংখ্যায় এবারের যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন।

>> প্রথা অনুযায়ী, নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট হচ্ছে।

>> ১৮-র উপর প্রত্যেক মার্কিন নাগরিকই ভোট দিতে পারেন, তবে এজন্য আগে থেকেই নিবন্ধন করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে এখন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ২২ কোটি।

>> এবার ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রায় ১৪ কোটি ৬০ লাখ ভোটার নির্বাচনে ভোট দিতে নিবন্ধন করেছেন।

>> নির্বাচনের দিন কোনো সাধারণ ছুটি না থাকায় বিপাকে পড়েন ভোটাররা। এ কারণে ভোটের হারও কম হয় বলে অনেকে মনে করেন। সর্বশেষ ২০১২ সালে ভোটদানের হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।

>> ৮ নভেম্বর ভোটদাতারা ৫৩৮ ইলেকটরাল কলেজ সদস্য মনোনীত করবেন। এ কলেজ সদস্যরাই পরে ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট ঠিক করবেন।

>> জিততে হলে কোনো প্রার্থীকে ইলেকটরাল কলেজ ভোটের অর্ধেকের চেয়ে বেশি ভোট, অর্থ্যাৎ অন্তত ২৭০টি ভোট পেতে হবে।

>> দু’টি বাদে ৪৮টি অঙ্গরাজ্যে বিজয়ী প্রার্থী সবগুলো ইলেকটরাল ভোটের মালিক হবেন, যে নিয়মকে ‘উইনার টেক অল’ বলা হয়। মেইনে এবং নেব্রাস্কায় এ নিয়ম খাটবে না।

>> প্রতি ১০ বছর পরপর জনসংখ্যা বিচারে রাজ্যগুলোর ইলেকটরাল ভোটের সংখ্যা ঠিক হয়। ২০০৪ সালে ফ্লোরিডায় ইলেকটরালের সংখ্যা ছিল ২৭, জনসংখ্যা বাড়ায় এবার সেখানে ইলেকটরালের সংখ্যা ২৯।

>> জনসংখ্যা যাই হোক না কেন, প্রতি রাজ্য ন্যূনতম তিনজন ইলেকটরাল পাবে। রাজ্যের বাইরে একমাত্র ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার তিনজন ইলেকটরাল থাকবে। 

>> এবারের নির্বাচনে ২৫ এর অধিক প্রার্থী প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য লড়ছেন। যদিও হিলারি আর ট্রাম্প ছাড়া কারো নামই সবগুলো রাজ্যের ব্যালটে থাকবে না।

>> ভোটে নির্বাচিত ইলেকটরাল কলেজ ভোটাররা মিলিত হবেন ১৯ ডিসেম্বর। সেদিন আনুষ্ঠানিক ভোটে নির্বাচিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট।

>> ৬ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করবেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিনেটের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

>> ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন চার বছরের জন্য নির্বাচিত নতুন প্রেসিডেন্ট।

>> নির্বাচনী প্রচারের জন্য হিলারির উত্তোলিত অর্থের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলারের উপরে, খরচও কম করেননি তিনি- প্রায় ৯শ’ মিলিয়ন ডলার। ট্রাম্প তুলেছেন হিলারির অর্ধেক- ৫১২ মিলিয়ন, খরচ করেছেন ৪৩০ মিলিয়ন ডলার।

>> নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের ২১৫টি গণমাধ্যম হিলারিকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দিয়েছে। এ দৌড়ে ট্রাম্পের অবস্থান বেশ পেছনে। মাত্র ৮টি গণমাধ্যম জানিয়েছে- ট্রাম্প তাদের পছন্দের প্রার্থী।

>> নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন বিতর্কের জন্ম দেয়া ট্রাম্পকে সমর্থন দেবেন না বলে জানিয়েছেন বুশ পরিবারের সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট। রিপাবলিকান পার্টির ৪১ জন সিনেটর হিলারিকে ভোট দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। রিপাবলিকান প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন জন ম্যাককেইনের মত প্রভাবশালী রিপাবলিকান নেতা। একমাত্র ব্যতিক্রম- বব ডৌল। ১৯৯৬ সালে বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে লড়া ডৌল বলেছেন- ‘ট্রাম্প একজন অসাধারণ প্রেসিডেন্ট হবেন’।

>> নির্বাচনী অফিসের ক্ষেত্রেও অনেকখানি এগিয়ে ‍হিলারি। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর‌পর্যন্ত বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে হিলারির নির্বাচনী কার্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৪০৯টি; অন্যদিকে ট্রাম্পের ছিল ২০৭টি। অবশ্য দু’জন মিলেও ২০১২ সালে ওবামার কার্যালয়ের সংখ্যা টপকাতে পারেননি, সেবার মাঠ পর্যায়ে ওবামার অফিস ছিল ৭৯০টি।

>> প্রচারের বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্প হিলারিকেসহ বিভিন্ন ব্যক্তি, স্থান এবং বিষয়কে আক্রমণ করে টুইটও করেছেন। জুনের পর থেকে তিনি এ ধরণের ২৮২ টি আক্রমণাত্মক টুইট করেছেন বলে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বার বলা শব্দদ্বয় হচ্ছে- ‘ক্রুকড হিলারি’।

>> এবারের নির্বাচনে বিতর্কও হয়েছে অগুণতি বিষয় নিয়ে। এর মধ্যে আছে ট্রাম্প ইউনিভার্সিটি, ট্রাম্প ফাউন্ডেশন, ট্রাম্পের ট্যাক্স রিটার্ন, মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল তোলা, ‍মুসলিম অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা, ফাঁস হয়ে যাওয়া ট্রাম্পের ভিডিও, হিলারি-ট্রাম্পের ব্যক্তিগত জীবন, সাবেক মিস ইউনিভার্সের ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, হিলারির ইমেইল কাণ্ড ইত্যাদি ইত্যাদি।