হিলারি-ট্রাম্পকে নিয়ে বিতর্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত মঞ্চে আসার আগে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয়েছে প্রধান দু্ই দলের প্রার্থীকে। এই সময়ের মধ‌্যে ডেমোক্রেট দলীয় প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন এবং রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয়েই নিজেদের কর্মকাণ্ড এবং বক্তব‌্যের মাধ‌্যমে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2016, 08:52 AM
Updated : 8 Nov 2016, 08:52 AM

নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখানোর পরপরই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন ধনকুবের ট্রাম্প। ওই সময়েই মেক্সিকানদের ‘ধর্ষক ও সন্ত্রাসী’ বলে আলোচনায় চলে আসেন এই রিপাবলিকান।

কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ট্রাম্পের প্রচারের পারদ যেন তড়তড়িয়ে চড়তে থাকে। একে একে আলোচনায় আসেন অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ কঠোর করা, মুসলমানদের ‘তাড়িয়ে’ দেয়া নিয়ে।

বিচারক, সাবেক মিস ইউনিভার্স, ফক্স নিউজের একজন উপস্থাপক, মুসলিম পরিবারের এক যুদ্ধাহতকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেও খবরের শিরোনাম হয়েছেন ট্রাম্প।

হিলারি শিবিরের বারবার প্রচারণা সত্ত্বেও এই রিপাবলিকান প্রার্থী ১৮ বছর ধরে দেয়া তার ট্যাক্স রিটার্নের কপি দেখান নি। এড়িয়ে গেছেন তার দাতব্য সংস্থা নিয়ে করা বিভিন্ন সমালোচনাও। আর এসব কারণে হারিয়েছেন প্রভাবশালী অনেক রিপাবলিকান ও প্রতিষ্ঠানের সমর্থন।

প্রচারের সময়ে বিপাকে পড়েছেন হিলারিও। পররাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালে ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় ইমেইল পাঠানোর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার দক্ষতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

যদিও সেসব ইমেইলে রাষ্ট্রের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে তদন্ত সংস্থা এফবিআই। হিলারি ‘ভুল করেননি’ এফবিআইয়ের এমন বক্তব্যের পরও এ কেলেঙ্কারি হিলারিকে জনপ্রিয়তার শীর্ষ থেকে নামিয়ে এনেছে।

ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে বিদেশি রাষ্ট্রের অর্থ সাহায্য নিয়েও বারবার প্রশ্ন তুলেছে ট্রাম্প শিবির। এখানে অর্থ দেয়া অনেকে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসকে অর্থ সাহায্য দিচ্ছেন বলেও ধারণা উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের।

স্বামী বিল ক্লিনটনের নারীঘটিত কেলেঙ্কারিগুলোও সমস্যায় ফেলেছে সাবেক এই ফার্স্টলেডিকে। প্রচারের শেষ দিকে ক্যাম্পেইন ম্যানেজার জন পডেস্টা এবং আরও কয়েকজন শীর্ষ ডেমোক্রেট কর্মকর্তার ফাঁস হওয়া ইমেইলগুলোও বিপাকে ফেলেছে তাকে। 

তবে নির্বাচনের আগের মাসে এসে একেবারে ‘খাদে পড়ে যান’ দুই প্রার্থীই। ৭ অক্টোবর রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ভিডিও ফাঁস হয়ে যায়। ২০০৫ সালের ওই ভিডিওতে ট্রাম্পকে নারীদের নিয়ে অশালীন কথা বলতে শোনা যায়।

ভিডিওটি ফাঁস হওয়ার পর রিপাবলিকান দলে গৃহদাহ শুরু হয়। ভিডিওর বক্তব্য ‘আমাকে প্রতিফলিত করে না’ ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের পরও অসংখ্য প্রভাবশালী সিনেটর ও কংগ্রেসম্যান রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর উপর নিজেদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন।

এরপর বেশ কয়েকজন নারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। ট্রাম্প অবশ্য সবগুলো অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ‘নাটুকে’ এসব ঘটনা সাজিয়ে গণমাধ্যম ও ডেমোক্রেটরা তার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করছে বলেও দাবি করেন তিনি।

অভিযোগকারী নারীদের ‘মিথ্যাবাদী’ অ্যাখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি দেন এই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী।

নির্বাচনের মাত্র ১১ দিন আগে এফবিআই নতুন করে হিলারির ইমেইল নিয়ে তদন্তের ঘোষণা দিলে জনমত জরিপগুলোতে দুই প্রার্থীর ব্যবধান কমে আসে।

ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠ হুমা আবেদিনের সাবেক স্বামীর ল্যাপটপে হিলারির পাঠানো অনেক ইমেইলের সন্ধান পায় এফবিআই।

১৫ বছরের এক কিশোরীকে উত্যক্ত করতে ওই ব্যক্তির পাঠানো খুদেবার্তার অনুসন্ধান করতে গিয়ে ইমেইলগুলোর সন্ধান পায় তারা।

তবে নির্বাচনের একদিন আগে ওইসব ইমেইল পরীক্ষা করে এফবিআই বলছে, হিলারি নির্দোষ।