নেপালে এভারেস্টের বিপজ্জনক হ্রদ থেকে পানি নিষ্কাশন

বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া মাউন্ট এভারেস্টের কাছে একটি বিপজ্জনক হিমবাহ হ্রদ থেকে পানি নিষ্কাশনের কাজ শেষ করার কথা জানিয়েছে নেপালি সেনাবাহিনী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2016, 05:18 AM
Updated : 31 Oct 2016, 05:26 AM

বিবিসি জানিয়েছে, প্রায় পাঁচ হাজার মিটার (১৬ হাজার ৪০০ ফুট) উচ্চতায় ইমজা হিমবাহ হ্রদটি অবস্থিত, এর অতিরিক্ত পানি নিচের দিকের জনবসতি, পবর্তারোহণের পথ এবং সেতুগুলো ঢলে ভাসিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছিল।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হ্রদটির কোথাও কোথাও পানির গভীরতা ১৪৯ মিটার হয়ে দাঁড়িয়েছিল, কয়েক মাসের কঠিন পরিশ্রমে এর জলসমতল তিন দশমিক চার মিটার হ্রাস করা হয়েছে।

হিমালয় পর্বতমালার কয়েক হাজার হিমবাহ হ্রদের মধ্যে ইমজা অন্যতম।

অতি উচ্চতায় ভারী তুষারপাতের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে হয়েছে। ছবি: জল ও আবহাওয়া বিভাগ, নেপাল

বলা হচ্ছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় হিমবাহের গলন দ্রুততর হওয়ার কারণে এসব হ্রদগুলোর বেশিরভাগের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

নেপালের গত বছরের ভূমিকম্পে ইমজা হ্রদ কিছুটা ভারসাম্য হারিয়েছে বলেও শঙ্কা ছিল।

এ ধরনের প্রকল্পগুলোর মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ উচ্চতায় করা নিষ্কাশন প্রকল্প বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। নিরাপদে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ও স্থানীয় শেরপারা ছয়মাস ধরে কাজ করে একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ করেন।

নির্মাণ কাজ শেষে প্রায় ৪০ লাখ কিউবিক মিটার পানি ধীরে ধীরে ওই ড্রেন দিয়ে ছাড়া হয়, এ প্রক্রিয়ায়ও দুইমাস সময় লাগে।

প্রায় ৪০ লাখ কিউবিক মিটার পানি ওই ড্রেন দিয়ে ছাড়া হয়। ছবি: জল ও আবহাওয়া বিভাগ, নেপাল

নেপালের জল ও আবহাওয়া বিভাগের এই প্রকল্পের ব্যবস্থাপক টপ ক্ষেত্রি বিবিসিকে জানিয়েছেন, হিমালয়ের অন্যান্য হ্রদেও একই প্রক্রিয়া প্রয়োগ করে পানি নিষ্কাশন করা হবে।

তিনি বলেন, “এটি ছিল একটি পাইলট প্রকল্প। অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ছাড়াই এটি শেষ করতে পেরেছি। এবার অন্যান্য হিমবাহ হ্রদের ঝুঁকি কমাতে সেখানেও এ মডেলটি প্রয়োগ করা হবে।”

অতি উচ্চতায় ভারী তুষারপাতের মধ্যে কাজ করতে হয়েছে বলে প্রকল্পটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। প্রতিদিন মাত্র কয়েক ঘন্টা নিরাপদে কাজ করা যেত বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

নির্মাণকাজের সব মালামাল হেলিকপ্টারে করে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতায় নেওয়া হয়। 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নেপালকে সহায়তার করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ যে প্রকল্প গ্রহণ করেছে তার অংশ এই ইমজা প্রকল্প। এই প্রকল্পে প্রায় ৩০ লাখ ডলার সহায়তা দিয়েছে জাতিসংঘ।