বিবিসি বলছে, নাদিয়া মুরাদ বাসি এবং লামিয়া আজি বাসার নামের ওই দুই নারী হাজারো ইয়াজিদি নারীদের মধ্যে ছিলেন যাদের ২০১৪ সালে আইএস জঙ্গিরা ধরে নিয়ে যৌনদাসী করেছিল।
তারা উভয়েই পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। বর্তমানে তারা সংখ্যালঘু ইয়াজিদি ধর্ম সম্প্রদায়ের পক্ষে আন্দোলন করছেন।
এই দুই নারীকে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের উদারপন্থি আলদে গোষ্ঠী মনোনীত করেছিল। গোষ্ঠীটির প্রধান গুই ভারহোফস্তাদ নাদিয়া ও লামিয়াকে অনুপ্রেরণাদায়ী নারী হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, “তারা উভয়েই ঘৃণ্য বর্বরতার মুখে দাঁড়িয়ে অসামান্য সাহস ও মানবতা প্রদর্শন করেছেন।”
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট মার্টিন সুলজ বলেন, “ইউরোপে শরণার্থী হিসেবে আসা এই দুইজনকে সমর্থন ছিল খুবই প্রতীকী এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।”
২০১৪ সালের অগাস্টে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় শহর সিনজার আইএস জঙ্গিরা দখল করে নেওয়ার পর ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের লাখো মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
ওই সময় হাজার হাজার ইয়াজিদি নারী ও বালিকাকে ‘গণিমতের মাল’ হিসেবে গণ্য করে তাদের প্রকাশ্যে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেয় আইএস জঙ্গিরা। তাদেরকে আত্মীয়-স্বজন থেকে পৃথক করে ফেলা হয়। অনেককে গুলি করে হত্যাও করা হয়।
পরবর্তী সময়ে নাদিয়া সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হলেও ছয়ভাই ও মাকে হারান।
লামিয়া বাসারকেও কোচো থেকে যখন ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। ২০ মাসের বন্দিজীবনে তিনি বেশ কয়েকদফা পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন।
২০১৫ সালে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টের শাখারভ মানবাধিকার পুরস্কার পেয়েছেন সৌদি আরবের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্লগার রাইফ বাদাউয়ি।
'ইসলাম অবমাননা’র অভিযোগে ২০১২ সালে ফ্রি সৌদি লিবারেলস ওয়েবসাইটের লেখক বাদাউয়িকে প্রকাশ্যে এক হাজার বেত্রাঘাত (দোররা) ও ১০ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়। তাকে এক লাখ ৭৫ হাজার পাউন্ড জরিমানাও করা হয়।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার লড়াইয়ে সুনির্দিষ্ট অবদানের জন্য ১৯৮৮ সাল থেকে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট ব্যক্তি বা সংগঠনকে ‘শাখারভ প্রাইজ ফর ফ্রিডম অব থট’ পুরস্কার দিয়ে আসছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মুক্তমনা বিজ্ঞানী আন্দ্রেই শাখারভের নামে এই পুরস্কারের নামকরণ করা হয়েছে।