ফ্রান্সের ক্যালে শরণার্থী শিবিরে আগুন

ফ্রান্সের ক্যালে জঙ্গলে অবস্থিত শরণার্থী শিবিরে আগুন জ্বলছে। তিনদিন আগে ‘জঙ্গল ক্যাম্প’ টি বন্ধের কার্যক্রম শুরু করে ফরাসি কর্তৃপক্ষ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2016, 01:05 PM
Updated : 26 Oct 2016, 02:03 PM

বিবিসি’র খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার রাতে আগুনের সূত্রপাত হয়। বুধবার সকালেও আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। আগুনের কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গত মাসে ক্যালে জঙ্গল ক্যাম্প বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় ফ্রান্স। সোমবার থেকে শরণার্থীদের সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয় এবং এখন পর্যন্ত প্রায় চার হাজার শরণার্থীকে ফ্রান্সের অন্যান্য শরণার্থী ক্যাম্পে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ফরাসি কর্মকর্তাদের তথ্যানুযায়ী, সেখানে প্রায় সাত হাজার শরণার্থী বাস করত। যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি সেখানে ১০ হাজারের বেশি শরণার্থী বাস করত।

পাস-দ্যু-ক্যালের গভর্নর ফ্যাবিয়ান বুকচো স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, সেখানে এখান এক হাজারের কম শরণার্থী রয়েছে।

ফ্রান্সের ক্যালে ‘জঙ্গল ক্যাম্পে’ আগুন জ্বলছে। ছবি: রয়টার্স

ফ্রান্সের ক্যালে ‘জঙ্গল ক্যাম্পে’ আগুন জ্বলছে। ছবি: রয়টার্স

ক্যালে জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীরা যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রত্যাশী। তারা যে কোনও উপায়ে সেখানে পৌঁছতে চায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসি প্রতিনিধি জানান, ক্যালে বন্দরের দিকে যাওয়ার প্রধান সড়কের পাশের জঙ্গলে গড়ে উঠা শরণার্থী ক্যাম্পের কুটিরগুলোতে রাতভর আগুন জ্বলে এবং সেগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

“শরণার্থীরা জঙ্গল ক্যাম্প ছেড়ে যেতে চাইছিল না। খুব সম্ভবত শেষ প্রতিবাদ হিসেবে তারা তাদের কুটিরগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। হয়ত তারা কর্তৃপক্ষকে কুটিরগুলোর দখল দিতে চায়নি।”

তবে গভর্নর বুকচো বিএফএমটিভি’কে বলেন, “অভিবাসী জনগোষ্ঠী ঐতিহ্যগতভাবেই কোনও স্থান থেকে চলে যাওয়ার আগে সেখানকার সবকিছু ধ্বংস করে যায়।”

ফ্রান্সের ক্যালে ‘জঙ্গল ক্যাম্পে’ আগুন জ্বলছে। ছবি: রয়টার্স

ক্যালে পুলিশ কমিশনার বিবিসি’কে বলেন, “বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে শরণার্থীরা আমাকে জানিয়েছে।”

এ ঘটনার পর সেখানে আরও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকারের মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, “শরণার্থীদের ছেড়ে যাওয়া অস্থায়ী কুটিরগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজ আজও (বুধবার) চলবে। আমরা চেষ্টা করছি যেন সেগুলোতে কেউ আবারও আগুন দিতে না পারে।”

ক্যাম্পের এক বাসিন্দার বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, রাতভর চারিদিকে আগুন জ্বলেছে। একটা কুটিরের আগুন নেভাতে না নেভাতেই অন্য একটি কুটিরে আগুন জ্বলে উঠেছে।

“আগ্নিনির্বাপক বাহিনীর সদস্যরা আসতে দেরী করেছে। দীর্ঘ সময় ধরে শুধু আমরা এবং স্বেচ্ছাসেবকরা আগুনের সঙ্গে লড়াই করেছি।”

‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ এর প্রতিনিধি ডরথি সাং বিবিসি’কে বলেন, “গত রাতে ক্যাম্প জুড়ে যখন আগুন জ্বলছিল তখন কয়েকশ শিশু সেতুর নিচে রাত কাটিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।”

“আমরা জানি শিশুদের অনেকে পালিয়ে গেছে। এটিই বাস্তবতা। এখানকার বর্তমান পরিস্থিতি শিশুদের জন্য সত্যিই খুব ভয়ঙ্কর।”