হিটলারের সঙ্গে নিজের তুলনায় দোতার্তে

ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দোতার্তে নিজেকে জার্মানির নাৎসী নেতা অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

>>রয়টার্স
Published : 30 Sept 2016, 12:10 PM
Updated : 30 Sept 2016, 12:10 PM

মাদকের বিরুদ্ধে ফিলিপিন্স সরকারের অভিযানকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের ইহুদি নিধনযজ্ঞের সঙ্গে তুলনা করে দোতার্তে বলেন, হিটলার লাখো ইহুদি মেরেছেন, আর তিনি মারছেন মাদকসেবী।

ফিলিপিন্সের ৩০ লাখ মাদকসেবী ও চোরাকারবারিকে নির্মূল করতে পারলে  ‘খুশি হবেন’ বলে জানান দোতার্তে।

তার এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদি সম্প্রদায়। এতে ফিলিপিন্সের এ নেতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ বাড়বে।

শুক্রবার ভিয়েতনাম সফর শেষে দাভাও শহরে সাংবাদিকদেরকে দোতার্তে বলেন,সমালোচকরা তাকে “হিটলারের জ্ঞাতি ভাই হিসেবে চিত্রিত করেছেন।” হিটলারের ইহুদি নিধনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ফিলিপিন্সে লাখ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে। তাদের হত্যা করতে পারলে আমি খুশি হব।”

নিজের দিকে নির্দেশ করে দোতার্তে বলেন, “জার্মানির ছিল হিটলার। ফিলিপিন্সের আছি আমি।”

“আমার শিকার কারা হবে আপনারা জানেন। দেশের সমস্যা দূর করতে সব অপরাধী নির্মূল করে আমি আগামী প্রজন্মকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে চাই ।”

দোতার্তের এমন বক্তব্যর নিন্দা জানিয়েছে ইহুদিরা। সাইমন উইসেন্থাল সেন্টারের ডিজিটাল টেরোরিজম অ্যান্ড হেট প্রজেক্টের প্রধান রাব্বি আব্রাহাম কুপার একে  ‘ন্যাক্কারজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “দোতার্তের উচিত নিজের এ ন্যাক্কারজনক বাগাড়ম্বরের কারণে তার হত্যাযজ্ঞের শিকারদের প্রতি ক্ষমা চাওয়া।”

যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিদের আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যান্টি-ডিফামেশন লিগ এর পরিচালক বলেন, “মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নির্বিচারে হত্যার শিকারদের সঙ্গে নাৎসী হত্যাযজ্ঞের শিকারদের তুলনা করাটা ঠিক নয়। এটি অত্যন্ত আক্রমণাত্মকও। একজন নেতা নিজেকে ওইরকম একজন দানবের (হিটলার) সঙ্গে তুলনা করতে চাইবেন কেন তা বোধগম্য নয়।”

এর আগে অবশ্য ফিলিপিন্সের নির্বাচনের সময় বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনো সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, দোতার্তের উত্থান ১৯২০ ও ১৯৩০ এর দশকের হিটলারের উত্থানের সঙ্গে তুলনীয়।

দোতার্তে এ বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর ৩০ জুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপরই তিনি দেশে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান ঘোষণা করেন। দেশটিতে এ পর্যন্ত মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩,১০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো তার এ অভিযানকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে সমালোচনা করলেও ক্ষ্যান্ত দেননি দোতার্তে।