এমএইচ১৭ ভূপাতিত করা ক্ষেপণাস্ত্র এসেছিল ‘রাশিয়া থেকে’

পূর্ব ইউক্রেইনে যে বিউক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মালয়েশিয়ার এমএইচ১৭ বিমানটি বিধ্বস্ত হয় সেটি রাশিয়া থেকে এসেছিল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2016, 02:42 PM
Updated : 28 Sept 2016, 02:42 PM

ডাচ নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত দল ‘জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিম’ (জেআইটি) নেদারল্যান্ডসে ২০১৪ সালের ওই দুর্ঘটনার শিকার হওয়া মানুষদের স্বজনদের কাছে এক বিশেষ ব্রিফিংয়ে একথা জানিয়েছে।

তারা আরও জানায় ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছিল রুশ-সমর্থিত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে।

২০১৪ সালের ১৭ জুলাই আমস্টার্ডাম থেকে কুয়ালালামপুরগামী বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মাঝ আকাশে বিধ্বস্ত হয়ে এর ২৯৮ আরোহীর সবাই নিহত হয়।

রাশিয়া বরাবরই এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে এবং ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে দাবি করে আসছে।

ফলে তদন্ত দলের ওই বক্তব্যে এমএইচ১৭ ভূপাতিতের ঘটনায় রাশিয়ার সেনাবাহিনী, ক্রেমলিন এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনেরও জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান ডাচ পুলিশ তদন্ত কর্মকর্তা উইলবার্ট পাউলিসেন বলেছেন, “ফৌজদারি তদন্তের ভিত্তিতে আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, রাশিয়া ফেডারেশন থেকে আনা ৯এম৮৩ সিরিজের বিউক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ফ্লাইট এমএইচ১৭ বিধ্বস্ত হয়েছিল। আর  ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপকটি পরে ইউক্রেইন থেকে রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।”

গতবছর ডাচ সেফটি বোর্ডের তদন্তেও রুশ-নির্মিত বিউক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে এমএইচ১৭ বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে সে তদন্তে ক্ষেপণাস্ত্রটি কোথা থেকে ছোড়া হয়েছিল তা বলা হয়নি।

নেদারল্যান্ডস নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তদল জেআইটি’ তে অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, মালয়েশিয়া ও ইউক্রেইনের তদন্ত কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা বলছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি পূর্ব ইউক্রেইনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পাভোমেইস্ক গ্রাম থেকে ছোড়া হয়েছিল।

রাশিয়া এ তদন্তের ফলকে ‘চরম রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’  এবং উস্কানিমূলক বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিউক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কোনও বিমান বিধ্বস্ত হয়নি বলেও দাবি করেছে মস্কো।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের এখতিয়ার তদন্ত কর্মকর্তাদের নেই। তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনরা বিষয়টি বিস্তারিত জানতে আগ্রহী।

তদন্তকারীরা বলছেন, রাশিয়া থেকে (বিউক) ক্ষেপণাস্ত্রটি নিয়ে আসা এবং সেটি ছোড়ার সঙ্গে প্রায় ১০০ লোক জড়িত আছে। কিন্তু এখনও তাদের নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

কার নির্দেশে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপকটি পূর্ব ইউক্রেইনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং কোথা থেকে সেটি ছোড়ার আদেশ এসেছিল তা প্রমাণ করাও জরুরি বলে মনে করেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

জেআইটি’র তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ফৌজদারি বিচার শুরু করা সম্ভব হবে। যদিও তদন্ত প্রতিবেদনে সন্দেহভাজন কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।