রোববার নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত ওই জাতিসংঘ অধিবেশনে সুষমা বলেন, “সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ইসলামাবাদ যে ভূখণ্ড দখল করে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছে, তা অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
“আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি, জম্মু ও কাশ্মির ভারতের অবিচ্ছিন্ন অংশ এবং সবসময় তা-ই থাকবে।”
১৮ সেপ্টেম্বর খুব ভোরে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের উরি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেডের সদর দপ্তরে চার ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীর’ হামলায় ১৮সেনা নিহত হয়। গত ১৫ বছরে কাশ্মিরে ভারতীয় সেনাদের উপর এটিই সবচেয়ে বড় আঘাত।
দুই দিন পর সন্ধ্যায় নওগ্রাম সেক্টরে অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে এক ভারতীয় সেনা নিহত ও অপর দুইজন আহত হয়।
উরিতে হামলা চালানো চার বিচ্ছিন্নতাবাদী পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ এর সদস্য বলে দাবি ভারতের।
এরাই ২ জানুয়ারি পাঠানকোটে ভারতীয় বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে।
পরপর দুটি হামলার পর পাকিস্তানকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করতে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে ভারত।
যদিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এ অভিযোগ অস্বীকার করে জাতিসংঘে দেওয়া বক্তৃতায় বলেন, তার সরকারের সঙ্গে ভারতের আলোচনায় বসার মতো পরিস্থিতি এখন আর নেই। ভারত বর্তমান পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে তুলছে।
উরি হামলার পেছনের ‘প্রকৃত তথ্য উদঘাটনে’ সোমবার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন নওয়াজের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ।
রেডিও পাকিস্তানকে তিনি বলেন, “ভারতে যখনই কোনো হামলা হয়েছে, দিল্লি থেকে কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই সব সময় পাকিস্তানের উপর দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
“উরির প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করতে একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশন গঠন করা উচিত।”
৯ জুলাই পুলিশি অভিযানে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর থেকে কাশ্মির নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়।
বুরহানের মৃত্যুর পর তার সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৯০ জন নিহত এবং প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মানুষ আহত হয়েছে।
নিউ ইয়র্কে ভাষণে নওয়াজ বলেন, “নয়া দিল্লির সঙ্গে ইসলামাবাদ শান্তি স্থাপন করতে চায়। কিন্তু কাশ্মির সমস্যা সমাধান ছাড়া তা সম্ভব নয়।”
অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, উরিতে নিহত ১৮ ভারতীয় সেনার আত্মত্যাগের কথা ভারত ভুলবে না এবং বিশ্বজুড়ে ‘সন্ত্রাসী রপ্তানির’ কারণে তারা আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে।